Advertisement
E-Paper

কন্যাশ্রী ট্যাবলো বাদ কেন, সংঘাত কেন্দ্র ও রাজ্যের

প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তরজায় জড়িয়ে পড়ল রাজ্য। মোদী জমানার প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো থাকছে না, আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কারণ রাজ্য সরকার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পকে থিম করে ট্যাবলো তৈরি করতে চেয়েছিল। তাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি আপত্তি তোলে। রাজ্য জেদ ধরে থাকায় পশ্চিমবঙ্গ বাদই পড়ে যায়। রাজ্যের তরফে এত দিন প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলা না হলেও গতকাল প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পর এ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৪:০৮
প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডের কুচকাওয়াজে কন্যাশ্রীর সেই ট্যাবলো। ছবি: রাজীব বসু।

প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডের কুচকাওয়াজে কন্যাশ্রীর সেই ট্যাবলো। ছবি: রাজীব বসু।

প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তরজায় জড়িয়ে পড়ল রাজ্য।

মোদী জমানার প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো থাকছে না, আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কারণ রাজ্য সরকার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পকে থিম করে ট্যাবলো তৈরি করতে চেয়েছিল। তাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি আপত্তি তোলে। রাজ্য জেদ ধরে থাকায় পশ্চিমবঙ্গ বাদই পড়ে যায়। রাজ্যের তরফে এত দিন প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলা না হলেও গতকাল প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পর এ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী ‘নারীশক্তি’-কে থিম করেছেন। শিশুকন্যা-কিশোরীদের উন্নয়নের জন্য নিজের ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প নিয়ে ট্যাবলো করেছেন। কিন্তু মমতার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পকে বাদ দিয়েছেন। কন্যাশ্রী ট্যাবলোটি রেড রোড-এর কুচকাওয়াজে ব্যবহার করা হয়। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রশ্ন, “শিশুকন্যাদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি মাত্র কয়েক দিন আগে শুরু হয়েছে। এর বাজেট মাত্র ১০০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রীতে ১০০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। কন্যাশ্রীর ছায়ায় কি কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি ঢাকা পড়ে যেত?”

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে অবশ্য রাজ্যের এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সংস্কৃতি জগতের কৃতীদের নিয়ে একটি কমিটি ট্যাবলো বাছাই করে। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে রাজ্যকে বিকল্প ভাবনা জানাতে বলা হয়। কিন্তু রাজ্যের প্রতিনিধিরা একটিমাত্র পরিকল্পনা নিয়েই জোরাজুরি করে গিয়েছেন। তাই পশ্চিমবঙ্গকে আর ডাকা হয়নি।

কেন ‘কন্যাশ্রী’ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কমিটি? মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রজাতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রার মূল উদ্দেশ্য হল দেশের সামরিক শক্তি ও সাংস্কৃতিক ও ভৌগলিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরা। কোনও রাজ্য নিজস্ব প্রকল্পে কী কাজ হয়েছে, তা প্রচারের মঞ্চ এটা নয়।

তৃণমূলের পাল্টা প্রশ্ন, তা হলে মোদীর মস্তিষ্কপ্রসূত যাবতীয় প্রকল্প প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোতে জায়গা পেল কী করে? এ বারের শোভাযাত্রায় ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর সঙ্গে মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা নিয়েও ট্যাবলো হয়েছে। ডেরেক বলেন, “এক দিকে মোদী সরকার কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার কথা বলবে, আবার রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজনীতিও করবে, তা হয় না।” গুজরাতের এ বারের ট্যাবলোর বিষয় ছিল সর্দার পটেলের মূর্তি তৈরির প্রকল্প। সেটিও সরকারি প্রকল্প। তা হলে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে আপত্তি কেন, প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা আবার বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো নিয়ে বরাবরেরই সমস্যা। ট্যাবলো হল একটি চলমান প্রদর্শনী। কোনও জটিল বিষয়বস্তু সেখানে তুলে ধরা যায় না। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমল থেকেই কখনও তেভাগা আন্দোলন, কখনও পঞ্চায়েতি রাজ, কখনও পরমাণু পরীক্ষার প্রতিবাদে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-এর মতো জটিল বিষয় নিয়ে ট্যাবলো করতে চায় পশ্চিমবঙ্গ। তাতেই সমস্যা হয়। এই মতবিরোধের জেরে বুদ্ধদেব পশ্চিমবঙ্গের তরফে ট্যাবলোর প্রস্তাব পাঠানোই বন্ধ করে দেন। মমতা এসে ফের তা শুরু করেন। কিন্তু তিনিও এক বার রবীন্দ্রনাথের স্বার্ধশতবর্ষের ট্যাবলোর সঙ্গে ‘নীল দিগন্তে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতই বাজবে বলে জেদ ধরেছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ অনমনীয় মনোভাব দেখানোর ফলেই রাজ্যের ট্যাবলো এ বছর বাদ পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর বক্তব্য, “রাজ্যের অসহযোগিতা ছিল বলে অনেক তথ্য পাচ্ছি। রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল প্রজাতন্ত্র দিবসকে রাজনীতির বাইরে রাখুক।”

republic day tableau kanyashree
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy