Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জামিন চেয়ে সন্ধিরের তৃতীয় আর্জিও খারিজ

আগে দু’-দু’বার আবেদন খারিজ হয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবালের জামিনের আবেদন মঙ্গলবার তৃতীয় বারের জন্য খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন সন্ধির ছাড়াও সারদা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সদানন্দ গগৈকে জেল-হাজত থেকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালত ওই দুই অভিযুক্তকে ১০ মার্চ পর্যন্ত ফের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সারদা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল রজত মজুমদার গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৭
Share: Save:

আগে দু’-দু’বার আবেদন খারিজ হয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবালের জামিনের আবেদন মঙ্গলবার তৃতীয় বারের জন্য খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন সন্ধির ছাড়াও সারদা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সদানন্দ গগৈকে জেল-হাজত থেকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালত ওই দুই অভিযুক্তকে ১০ মার্চ পর্যন্ত ফের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

সারদা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল রজত মজুমদার গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সিবিআই অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রজতবাবুর জামিন খারিজের আবেদন নিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে। সারদা রিয়েলটি মামলায় অভিযুক্ত সৃঞ্জয় বসুর জামিন খারিজ করার জন্য ইতিমধ্যে হাইকোর্টে আবেদনও করেছে সিবিআই। আগামী ৩ মার্চ সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সন্ধিরের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। সন্ধিরের জামিনের আবেদন জানিয়ে আইনজীবী শেখর বসু ও মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, তাঁদের মক্কেল ১৮৫ দিন জেল-হাজতে রয়েছেন। মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তাই তাঁর জামিন পাওয়া উচিত। তা ছাড়া সন্ধির সেবি-র সঙ্গে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়েছেন বলে সিবিআই যে-অভিযোগ করছে, তা ভিত্তিহীন। সেবি-র একটি নির্দেশ দেখিয়ে আইনজীবীরা আদালতে জানান, সারদা-প্রধানকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে এক বারও যোগাযোগ করেননি। দাখিল করেননি সারদার নথিপত্রও। সুদীপ্ত উল্টে সেবি-কে জানিয়েছেন, তাঁর সব নথিপত্র যে-কম্পিউটার সার্ভারে রয়েছে, সেটি আমেরিকায়। তাই সুদীপ্তের হয়ে সন্ধির সেবি-কে প্রভাবিত করেছিলেন, এটা ঠিক নয়।

জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী কে রাঘবচারুলু ও মহম্মদ আসরাফ আলি বলেন, সেবি-র উপরে প্রভাব খাটানোর বিনিময়ে সুদীপ্তের কাছে আগাম তিন কোটি এবং প্রতি মাসে আট লক্ষ টাকা দাবি করেন সন্ধির। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকার (নিতু)-র ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ছিলেন ওই ব্যবসায়ী। উত্তর-পূর্ব ভারতে সারদার ব্যবসা বাড়াতে সেবি-র একাংশকে হাত করেছিলেন সন্ধির। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার ১৫ জন পদস্থ কর্তা এখন সিবিআইয়ের নজরে বন্দি।

সিবিআইয়ের আইনজীবীরা আরও জানান, সারদা-তদন্তে অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে। এর পরের দফায় সিবিআই যে-চার্জশিট পেশ করতে চলেছে, তাতে সন্ধিরের ভূমিকা আরও স্পষ্ট করে দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তিনি সেবি-র বেশ কয়েক জন অফিসারকে প্রভাবিত করতে পারেন।

সারদাকে টপকে রোজভ্যালি

বেসরকারি যে-লগ্নি সংস্থাকে নিয়ে সাম্প্রতিক কালের হইচই, সেই সারদা গোষ্ঠীর থেকে বেশি টাকা তুলেছে অন্য লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালি। তদন্ত শেষ করে এই তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় কোম্পানি বিষয় মন্ত্রক। তাদের হিসেব অনুযায়ী রোজভ্যালি গোষ্ঠী বাজার থেকে প্রায় ১০ হাজার ২৮১ কোটি টাকা তুলেছে। আর সারদা গোষ্ঠী তুলেছে ২৪৫৯ কোটি। দুই সংস্থা মিলে তুলেছে মোট ১২ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, কেন্দ্রীয় কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক গত ৭ জুলাই সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া-সহ সারদার মোট ১৪টি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেছে। রোজভ্যালি রিয়েল এস্টেট এবং কনস্ট্রাকশন-সহ মোট ১৮টি সংস্থার বিরুদ্ধেও তদন্ত শেষ হয়েছে ১২ ডিসেম্বর। কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা মঙ্গলবার রাজ্যসভায় লিখিত বিবৃতিতে এ কথা জানান। মোট ৩৮টি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রী অরুণ জেটলিও সংসদে জানান। সেগুলি সারদা ও রোজভ্যালির অন্তর্ভুক্ত। ২০১১-’১২ সাল থেকে ১০২টি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল। তার মধ্যে ৯৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে এসএফআই-ও তদন্ত করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE