Advertisement
E-Paper

টোকায় বাধা মাধ্যমিকে, তাণ্ডব পরীক্ষার্থীদের

মাধ্যমিকে টোকাটুকি ঠেকাতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সোমবার, অঙ্ক পরীক্ষার দিনে টুকলিতে বাধা পেয়ে স্কুলে গোলমাল-ভাঙচুর করা হল। টুকলি সরবরাহের অভিযোগে এ দিনই উত্তর দিনাজপুরের একটি স্কুল থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৮:২০
পুলিশি প্রহরায় বনগাঁ স্টেশনের পথে কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষিকারা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

পুলিশি প্রহরায় বনগাঁ স্টেশনের পথে কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষিকারা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

মাধ্যমিকে টোকাটুকি ঠেকাতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সোমবার, অঙ্ক পরীক্ষার দিনে টুকলিতে বাধা পেয়ে স্কুলে গোলমাল-ভাঙচুর করা হল। টুকলি সরবরাহের অভিযোগে এ দিনই উত্তর দিনাজপুরের একটি স্কুল থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলে মূলত ছাত্রেরা গণ্ডগোল বাধালেও বনগাঁর কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষানিকেতনে যোগ দেন কিছু অভিভাবকও। আতঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্ধারে আসতে হয় পুলিশকে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য কোথাও টোকাটুকির কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “কোথাও-কোথাও কড়া নজরদারির প্রতিবাদে হইচই করেছে ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু কোথাও নকল হচ্ছে না। এ বার কোনও কেন্দ্রেই টোকাটুকির সুযোগ দেওয়া হবে না।” গণ্ডগোল রুখতে রাজ্য কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যে স্কুলের পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে ভাঙচুর করবে, সেই স্কুলকে সমমানের জিনিস কিনে দিতে হবে।” এই মর্মে সব স্কুলকে নির্দেশও পাঠানো হয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের পড়ুয়ারা এ বার পরীক্ষা দিচ্ছে কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতনে। পরীক্ষা শুরুর আগেই তাদের কয়েক জন কালীতলার স্কুলটির দু’টি শৌচাগারের দরজা ভেঙে ফেলে। টুুকলি করতে না পেরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হুমকি-শাসানিও দিতে থাকে। পরীক্ষা শেষে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশে কটূক্তি করা হতে থাকে। স্টাফরুম লক্ষ করে ইটও উড়ে আসে। আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষিকারা দরজা-জানলা বন্ধ করে দেন। পাশের একটি দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ এলে তাদের সঙ্গেও বচসা বাধে কয়েক জন পরীক্ষার্থীর।

কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক সকুমার দেবনাথ বলেন, “টুকলি করতে না পেরে ভূগোল পরীক্ষার পরেও কয়েক জন দুই শিক্ষিকার মুখে টুকলি ছুড়ে মেরেছিল। ওদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ছাত্রদের প্ররোচনা দেন অভিভাবকেরাও। এটা ভাবতে পারছি না।” কয়েক জন অভিভাবক পাল্টা বলেন, “ছাত্রেরা ১০ মিনিট সময় বাড়তি চেয়েছিল। শিক্ষক-শিক্ষিকারা কর্ণপাত করেননি। ওঁরা তো টুকলি করেই পাশ করেছেন!” কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নারায়ণচন্দ্র ঘোষ বলেন, “পরীক্ষার্থীরা ছাত্রসুলভ আচরণ করেনি। ওদের বোঝাব। বাকি পরীক্ষার দিনগুলিতে স্কুলের শিক্ষকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকবেন।”

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুুরে শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে রামগঞ্জ হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীরা। টুকতে বাধা পেয়ে সেখানেও কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রের মাঠে রাখা বেঞ্চ ভাঙচুর করে। অস্থায়ী শৌচাগারে আগুন লাগানোর চেষ্টাও হয়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন পাল বলেন, “নিয়ম মেনেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ভাঙচুর বা শৌচাগারে আগুন লাগানোর কারণ বুঝলাম না।” রামগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অপর্ণা শূর আবার দাবি করেন, “প্রতি দিনই আমাদের স্কুল থেকে শিক্ষকেরা ওখানে যান। গোলমাল হয়েছে বলে শুনিনি। ওই স্কুলের তরফেও কিছু জানানো হয়নি।”

টুকলি সরবরাহের অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরেরই চাকুলিয়ার তরিয়াল স্কুল থেকে আনজার আলম নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। গোয়ালপোখরের গোয়াগাও এবং মজলিশপুরেও টুকলিতে বাধা পেয়ে পরীক্ষার্থীরা স্কুলের বাইরে ক্ষোভ দেখায় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মালদহের শান্তিদেব্যা হাইস্কুলে পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নপত্র বেরিয়ে আসে। কয়েক জনকে তা সমাধান করতেও দেখা যায়। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তা আর পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছয়নি।

madhyamik exam 2014 mathematics exam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy