Advertisement
E-Paper

দোষী পুলিশকর্মীদের ধরার দাবি বিমানের

পাড়ুইয়ের বধূকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষী পুলিশকর্মীদের গ্রেফতারির দাবি করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বৃহস্পতিবার বিমানের নেতৃত্বে সাত্তোরে নির্যাতিতার গ্রামে যান বারো জনের একটি বাম প্রতিনিধিদল। সেখানে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, “নির্যাতিতা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। বুঝতে পারছি, এখনও সব আতঙ্কের ছাপ যায়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তিনি এক জন নারী। অথচ এমন ঘটনার তিনি নিন্দা করেন না। তার জেরেই দুষ্কৃতীরা উৎসাহ পাচ্ছে। পুলিশ অবিলম্বে দোষী পুলিশকর্মীদের গ্রেফতার করুক।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৯
সাত্তোরে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলছেন বামফ্রন্টের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

সাত্তোরে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলছেন বামফ্রন্টের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

পাড়ুইয়ের বধূকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষী পুলিশকর্মীদের গ্রেফতারির দাবি করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বৃহস্পতিবার বিমানের নেতৃত্বে সাত্তোরে নির্যাতিতার গ্রামে যান বারো জনের একটি বাম প্রতিনিধিদল। সেখানে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, “নির্যাতিতা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। বুঝতে পারছি, এখনও সব আতঙ্কের ছাপ যায়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তিনি এক জন নারী। অথচ এমন ঘটনার তিনি নিন্দা করেন না। তার জেরেই দুষ্কৃতীরা উৎসাহ পাচ্ছে। পুলিশ অবিলম্বে দোষী পুলিশকর্মীদের গ্রেফতার করুক।”

এ দিকে, এ দিনই সিউড়ি আদালতে গোপন জবানবন্দি দিলেন পাড়ুইয়ের নির্যাতিতা বধূ। আদালতে বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন নির্যাতিতার স্বামীও। অন্যদিকে এ দিনই সাত্তোরের বিজেপি কর্মীর স্ত্রী, ওই নির্যাতিতার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে, দোষী পুলিশকর্মী এবং অফিসারদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানালেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। এ দিন দুপুরে বিমানবাবুর নেতৃত্বে, রাজ্য বামফ্রন্টের তিন সদস্যা নিয়ে মোট বারো জনের একটি প্রতিনিধিদল নির্যাতিতার বাড়িতে যান। আদালত থেকে বেরিয়ে নির্যাতিতা পরে বলেন, “এত দিন যে অভিযোগ করেছি, বিচারকের কাছে তা-ই বলেছি।”

ওই নির্যাতিতার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন বিমানবাবু। নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের পাশে থাকা এবং প্রয়োজনে সব রকমের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন প্রতিনিধিরা। এ দিনই সিউড়ি আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন নির্যাতিতা ও তাঁর স্বামী। সেই কারণে, তাঁদের গ্রামে ফিরতে বিকেল হয়ে যায়। তাঁরা স্থানীয় পার্টি অফিসে অপেক্ষা করছিলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে বিমানবাবু কেন্দ্রডাঙ্গালের হাই মাদ্রাসার পড়ুয়াদের আবদারে অটোগ্রাফ দেন।

মনে করিয়ে দেন, কয়েক মাস আগে চৌমণ্ডলপুরের বাসিন্দারা পুলিশ এবং তৃণমূল সন্ত্রাসে আক্রান্তের পর, ওই গ্রামে যাওয়ার সময়ে সাত্তোরের দলীয় কার্যালয়কে তৃণমূলের কব্জা থেকে উদ্ধারের জন্য তাঁর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা। কর্মী এবং সমর্থকদের সঙ্গে সাতের দশকের আন্দোলনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। নজরুল ইসলাম, রবীন দেব, নরেন চট্টোপাধ্যায়, মঞ্জু কুমার মুখোপাধ্যায় সহ স্থানীয় বর্ষীয়ান আরএসপি প্রাক্তন বিধায়ক তপন হোড়ের মত মানুষকে নাগালে ঘণ্টা দুয়েক পেয়ে, শতাধিক পুরুষ মহিলা কর্মী সমর্থক এলাকা উন্নয়ন সহ আলোচনায় মেতে ওঠেন।

বিকেলে সাড়ে চারটে নাগাদ, বিমানবাবুর নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধিদল সাত্তোরের বাসস্ট্যান্ড পাড়ায় নির্যাতিতার বাড়িতে যান। কথা বলেন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে। বিকেলে পাঁচটা নাগাদ, সিউড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরলেন ওই বধু। নির্যাতিতার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন বিমানবাবু। নির্যাতিতার এবং তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান।

বীরভূমে বিজেপি-র উত্থান যে অঞ্চল থেকে, সেই পাড়ুই থানারই সাত্তোর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি ওই বধূর। দিন কয়েক আগে তিনি বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে, নিজের বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বোমাবাজির ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর এক ভাসুরপোকে ধরতে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে ওই গ্রামেই হানা দেয় বীরভূম জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। অভিযোগ, অভিযুক্তকে না পেয়ে পুলিশ তাঁর কাকিমাকে (ওই বধূ) তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। ওই বধূর পরিবারের দাবি, বীরভূম জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) ওসি কার্তিকমোহন ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ওই অত্যাচার চালিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে পাড়ুইয়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তফা, তাঁর দলবলও ছিল বলে নির্যাতিতার দাবি। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। যদিও ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চাপের মুখে পড়েছিল জেলা পুলিশ। তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। চাপের মুখে জেলার পুলিশ সুপার ওই ঘটনা নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে একটি রিপোর্ট দিতে বলেন। ওই রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই সে দিনের অভিযানে সামিল পুলিশ অফিসার এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে কার্তিকবাবুকে। ওই এসআই-সহ তিন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ‘শো-কজ’ করা হয়েছে এসডিপিও (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ-সহ জেলার ৯ পুলিশকর্মী ও আধিকারিককে।

প্রসঙ্গত, এ দিনই বীরভূম-সহ কয়েকটি জেলায় পুলিশসুপারের বদলির নির্দেশ আসে। এই বদলির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত সাড়ে তিন বছরে সাত বার বদল হয়েছে পুলিশ সুপারের। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা যেভাবে চালাতে চাইছেন, পুলিশ সেভাবে চলছে। সামগ্রিক পুলিশ প্রশাসনের এই আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি, ভেঙে পড়েছে। রাজ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

parui sattor biman basu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy