দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এবং রাজ্য কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন প্রথম সারির দুই নেতা হাফিজ আলম সৈরানি ও উদয়ন গুহ। গোলামালে পণ্ড হল যুব সংগঠনের বৈঠক। তার মধ্যে থেকেও লিখিত ভাবে নেতৃত্বের ব্যর্থতার প্রতিবাদ হল এবং রাজ্য কমিটির বৈঠকে না যাওয়ার কথা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচ নেতা। একই দিনে দলের মধ্যেই সব দিক থেকে নজিরবিহীন বিদ্রোহের মুখে পড়লেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতৃত্ব।
বিদ্রোহের কারণ, শাসক দলের সন্ত্রাস চলাকালীন দলের মধ্যে কোনও আলোচনা না করে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাওয়া এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সরল দেবকে আচমকা কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফিরিয়ে নেওয়া। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ দিন সৈরানি এবং উদয়নবাবু সওয়াল করেন, এখনকার পরিস্থিতি মাথায় রেখে সিপিএমের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দলের নেতা জয়ন্ত রায়ের নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাওয়া উচিত হয়নি। তাঁরা আরও প্রশ্ন তোলেন, দলের গঠনতন্ত্রকে অবজ্ঞা করে প্রাথমিক সদস্য পদ না থাকা সত্ত্বেও সরলবাবুকে কী ভাবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফিরিয়ে আনা হল? বৈঠকে তাঁরা বলেন, এ ধরনের ভুল সিদ্ধান্তের দায় নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্ব যখন সরে দাঁড়াচ্ছেন না, তা হলে তাঁরাই ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছেন।
দলের অন্দরে উদয়নবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, কোচবিহারের জেলা সম্পাদকের পদ থেকেও তিনি সরে দাঁড়াবেন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে যখন এই বিদ্রোহ ঘটছে তখন সেখানে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষের সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন। আজ, রবিবার দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সৈরানি, উদয়নেরা তো সেই বৈঠকে যাবেন-ই না, সরল-প্রশ্নে উত্ত্রর ২৪ পরগনার নেতারাও বৈঠক বয়কট করবেন। এই অবস্থায় অশোকবাবুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন কি না, দুই নেতার ইস্তফা অনুমোদন করেন কিনা দলের নজর রয়েছে সে দিকেই।
দলীয় দফতরের বাইরে কলেজ স্ট্রিটে এ দিন ফ ব-র যুব লিগের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সব জেলার নেতাদের কেন বৈঠকের খবর দেওয়া হল না, তাই নিয়ে বিতণ্ডায় এক সময় বৈঠক ভেস্তে যায়। তার আগেই অবশ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর) বৈঠকে বলেন তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বাম ফ্রন্টের সাংসদ, বিধায়করা প্রয়োজনে নবান্নের সামনেই অবস্থানে বসতে পারতেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে যাওয়ার দরকার ছিল না। তা ছাড়া, গত তিন বছরে ফ ব নেতৃত্ব নিজস্ব কোনও আন্দোলন কর্মসূচি নিতে ব্যর্থ। নেতৃত্ব বদলের জন্য অবিলম্বে রাজ্য কাউন্সিলের (বিশেষ অধিবেশন) দিনক্ষণ ঘোষণা করার দাবি তোলেন তাঁরা। বৈঠকের পরে ভিক্টর বলেন, “আমাদের দল যে ভাবে চলছে, সেই পদ্ধতিতে কিছু বদল আনার দরকার আছে বলে মনে করছি। আজকের দিনে কোনও দলই যুব সমাজের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া চলতে পারে না। নেতৃত্বকে সে কথা মাথায় রাখতে হবে।”
এক ফিসফ্রাই-কূটনীতির জেরে বাম শিবিরে আরও কত কি হয়, তাই এখন দেখার! যেমন দেখার নবতিপর অশোকবাবু এখন রাজ্য কমিটিতে কী বলেন সেটা-ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy