Advertisement
E-Paper

বিদেশে যাচ্ছে দামি পুরাবস্তু, সংরক্ষণ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে রামপূর্বার অশোকস্তম্ভের শীর্ষদেশের সিংহ বা প্রাচীন মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তির অঙ্গহানি হয়েছে কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে। জাদুঘরের অধিকর্তা সহ সাত জনকে সে জন্য দায়ী করে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। সেই জাদুঘর থেকেই ৯১টি পুরাবস্তু প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিন ও জাপানে। এই পুরাবস্তুগুলির বিমার মোট মূল্য প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৯

সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে রামপূর্বার অশোকস্তম্ভের শীর্ষদেশের সিংহ বা প্রাচীন মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তির অঙ্গহানি হয়েছে কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে। জাদুঘরের অধিকর্তা সহ সাত জনকে সে জন্য দায়ী করে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। সেই জাদুঘর থেকেই ৯১টি পুরাবস্তু প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিন ও জাপানে। এই পুরাবস্তুগুলির বিমার মোট মূল্য প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা। জাদুঘরের অছি পরিষদের একাধিক সদস্যের বক্তব্য, সংরক্ষণের কাজে অবহেলার নজির রয়েছে যে সংগ্রহশালায়, তারা কী ভাবে এত দামি পুরাবস্তু ঠিক ভাবে প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে গিয়ে আবার ঠিকঠাক ভাবে ফিরিয়ে আনতে পারবে? তাঁদের দাবি, এ ব্যাপারে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বাইরের বিশেষজ্ঞদের সাহায্যও নিচ্ছেন না।

জাদুঘরের ভাস্কর্যগুলি নিয়ে চিনের সাংহাইতে ২ ডিসেম্বর থেকে পরের বছর ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতীয় বৌদ্ধ শিল্পকলার প্রদর্শনী আছে। এই প্রদর্শনীটিই এর পরে চলে যাবে টোকিওতে। সেখানে জাপানের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ আর্ট-এ ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত প্রদর্শনীটি চলবে। ওই পুরাবস্তুগুলির অনেকগুলিই হাজার বছরেরও প্রাচীন। কয়েকটি প্রায় দু’হাজার বছরের পুরনো। এর মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের দণ্ডায়মান বুদ্ধ মূর্তি যার বিমা করা হয়েছে আট কোটি টাকায়, দ্বিতীয় শতকের বুদ্ধের মহানিষ্ক্রমণ ভাস্কর্যের বিমার মূল্য আড়াই কোটি, ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় বুদ্ধের চারটি মূতির বিমার মোট মূল্য ন’কোটি, খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের একটি মূর্তির বিমা করা হয়েছে সাড়ে চার কোটি টাকায়, ভারহুতের কনকমুনি বুদ্ধ মূর্তির বিমার মূল্য আট কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শুধু বিমার অঙ্কই বিবেচ্য নয়, এই মূর্তিগুলি ভারতীয় ঐতিহ্যের অঙ্গ। এক বার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর পূরণ করা যাবে না। অছি পরিষদের সদস্য শচীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এই অমূল্য ঐতিহ্য এত দূরে নিয়ে যাওয়া ও ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হল, তাঁঁরা জাদুঘরের মধ্যেই সংরক্ষণে অবহেলা দেখিয়েছেন।” অছি পরিষদের একাধিক সদস্যের বক্তব্য, প্রাচীন ভাস্কর্যগুলি নানা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার মধ্যে দিয়ে যাবে এই ক’মাস। সেক্ষেত্রে প্রাচীন ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া খুবই জরুরি ছিল।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এই মূর্তিগুলি প্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাদুঘরের অধিকর্তার নেতৃত্বে ১৪ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। সকলেই জাদুঘরেই কর্মরত। কিন্তু অভিযোগ, অছি পরিষদের কাছ থেকে এ নিয়ে চূড়ান্ত অনুমতিও নেওয়া। এমনকী তালিকায় কয়েক জনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অছি পরিষদ সদস্যদের আপত্তি আছে।

জাদুঘরের অধিকর্তা ফোন ধরেননি। জাদুঘরের মুখপাত্র তথা শিক্ষা অধিকর্তা সায়ন ভট্টাচার্য বলেন, “অধিকর্তা জানিয়েছেন, অছি পরিষদকে প্রদর্শনীর ব্যাপারে সব কথাই জানানো হয়েছে।”

museum valuable objects preservation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy