Advertisement
E-Paper

বিধায়ক পদ গেলে যাবে, ফের সরব সিউড়ির স্বপন

মুকুল-বিড়ম্বনার মধ্যেই দলের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। বললেন, বিধায়ক পদ গেলে যাবে, দুর্নীতি নিয়ে আপস করবেন না! দুর্নীতি নিয়ে দল ব্যবস্থা না নিলে অন্য পথে হাঁটবেন বলে তিনি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। দল অবশ্য ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা নেওয়ার সে মেয়াদ শেষ হয়েছে রবিবার। সিউড়ি পুরসভার আর্থিক দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে তাই এ বার আর রাজ্য সরকারের উপর নয়, বরং কেন্দ্রের উপরেই আস্থা রাখছেন তৃণমূলের এই বিক্ষুব্ধ বিধায়ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১১

মুকুল-বিড়ম্বনার মধ্যেই দলের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। বললেন, বিধায়ক পদ গেলে যাবে, দুর্নীতি নিয়ে আপস করবেন না!

দুর্নীতি নিয়ে দল ব্যবস্থা না নিলে অন্য পথে হাঁটবেন বলে তিনি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। দল অবশ্য ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যবস্থা নেওয়ার সে মেয়াদ শেষ হয়েছে রবিবার। সিউড়ি পুরসভার আর্থিক দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে তাই এ বার আর রাজ্য সরকারের উপর নয়, বরং কেন্দ্রের উপরেই আস্থা রাখছেন তৃণমূলের এই বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। রবিবার সকালে, সিউড়ি শহরের শিক্ষক ভবনে শ্রমিক সংগঠন আইএনটিউসি প্রভাবিত বিএসএনএলের নিরাপত্তা কর্মীদের সংগঠনের অনুষ্ঠানে শাসকদলের এই বিধায়কের আক্ষেপ, “অত্যন্ত সংবেদশীল বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। একাধিকবার পুরমন্ত্রীকেও বিষয়টি বলেছি। রবিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম, দল ব্যবস্থা নেয় কিনা দেখতে। এখনও পর্যন্ত দল কোনও পদক্ষেপ করেনি!” তাই এ বার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আইএনটিইউসি-র অনুষ্ঠানে তিনি কেন? স্বপনবাবুর ব্যাখ্যা, “শ্রমিকদের ভালমন্দ নিয়ে আলোচনায় বিধায়ক হিসাবে আমন্ত্রণ জানালে আমি সেখানে না যাওয়ার কোনও কারণ দেখি না।” আয়োজকেরাও জানিয়েছেন, স্থানীয় বিধায়ক হিসাবেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে স্বপনবাবুকে। এ দিন ওই অনুষ্ঠানের শেষেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফের সিউড়ি পুরসভার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন স্বপনবাবু।

কিছু দিন আগেই, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দলের হাতে থাকা সিউড়ি পুরসভার নানা ‘দুর্নীতি’র খতিয়ান দিয়ে তিনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। তাঁর দাবি, জল প্রকল্প এবং বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রায় ১০ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা সিউড়ি পুরসভা থেকে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, চিঠিতে স্বপনবাবু লিখেছেন, গরমিলের কথা আঁচ করে তিনি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (সুডা) কাছে অন্তত ৫টি চিঠি লেখেন এর আগে। কিন্তু একটিরও জবাব পাননি। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে স্বপনবাবুর দাবি ছিল, “পুরসভার দুর্নীতির চোটেই লোকসভা ভোটে সিউড়ি শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে বিজেপি-র থেকে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল।” সিউড়ি পুরসভায় ক্ষমতাসীন তৃণমূলই। পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান, দু’জনেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ। অন্য দিকে, জেলার রাজনীতিতে স্বপনবাবু বরাবরই অনুব্রত-বিরোধী শিবিরের। দুর্নীতি-বিতর্কে অনুব্রত অবশ্য পুরসভাকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন। এই নিয়ে অনুব্রত-স্বপন তরজায় জড়ান।

তৃণমূল বিধায়কের হুশিয়ারি, “দুর্নীতি ঠেকাতে দরকারে আদালতে যাব। মানুষের জন্য লড়াইয়ে যদি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয় বা দল আমাকে সরিয়েও দেয়, তাতেও পিছু পা হব না।” তাঁর আরও দাবি, আজ, সোমবার থেকেই তাঁর নতুন লড়াই শুরু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি লিখে তিনি সময় চাইবেন। মন্ত্রী সময় দিলে পুরসভার দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ তাঁর হতে তুলে দেবেন। পাশাপাশি আদালতে যাওয়ারও প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছেন।

সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্বল মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “উনি জনপ্রতিনিধি, আমরাও জনপ্রতিনিধি। ওঁর কোনও বিষয়ে পরামর্শ থাকতে পারে। আলোচনা থাকতে পারে। কিন্তু উনি আমার বস নন!” তাঁর আরও অভিযোগ, “বিধায়ক কখনও কোনও আলোচনা চাননি। পুরভোটের আগে শুধু শুধু মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। যে কেউ আদালতে যেতে পারেন তা নিয়ে কিছু বলার নেই। দলীয় নেতৃত্ব বলবেন।” স্বপনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “পুরপ্রধানের কথার জবাব দিতে চাই না। একটা বিষয়ের তদন্ত চেয়েছি। তা হলেই প্রমাণ হবে, কে ঠিক বলছে।”

swapankanti ghosh siuri tmc mla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy