Advertisement
E-Paper

বদল চাই বলেন ওঁরা, কেন এমন হল জানতে চাইব

যাঁকে চড় মেরেছেন তাঁর ছেলে, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই দেখা করতে চান চড়-কাণ্ডে ধৃত দেবাশিস আচার্যের মা শিবানী আচার্য। সুযোগ পেলে দেখা করতে চান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। প্রশ্ন তুলতে চান: যে শাসক দল ‘বদলা নয়, বদল চাই’-এর স্লোগান দেয়, অভিষেককে চড় কষানোয় তাদেরই নেতা-কর্মীদের হাতে কেন বেধড়ক মার খেতে হল তাঁর ছেলেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৩

যাঁকে চড় মেরেছেন তাঁর ছেলে, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই দেখা করতে চান চড়-কাণ্ডে ধৃত দেবাশিস আচার্যের মা শিবানী আচার্য। সুযোগ পেলে দেখা করতে চান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। প্রশ্ন তুলতে চান: যে শাসক দল ‘বদলা নয়, বদল চাই’-এর স্লোগান দেয়, অভিষেককে চড় কষানোয় তাদেরই নেতা-কর্মীদের হাতে কেন বেধড়ক মার খেতে হল তাঁর ছেলেকে।

তমলুক শহরে শিবানীদেবীদের বাড়িতে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ছবি। বছর বাহান্নর ওই প্রৌঢ়া অবশ্য দাবি করেছেন, আচার্য পরিবারের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। বলেছেন, “দিদিকে, শুভেন্দুকে আমরা ভালবাসি। তাই যত্ন করে ছবি রেখেছি।” তাঁর সংযোজন: “টিভিতে অভিষেককে দেখে, ওঁর কথা শুনে ভাল লেগেছে। ওঁর সঙ্গে একটি বার দেখা করতে চাই। কথা বলতে চাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও।”

কী বলবেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোকে, ছেলের হয়ে ক্ষমা চাইবেন?

তমলুকের বাড়িতে এ দিন সকালে শিবানীদেবী বলেছিলেন, “অভিষেকের সঙ্গে দেখা হলে তাঁকেই যা বলার বলব।” যদিও বিকেলে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “দিদিকে (মমতা) আমার প্রশ্ন, চড়টা খুনের চেষ্টা না গণপিটুনিটা খুনের চেষ্টা? আমার ছেলে যা করেছে, তা অত্যন্ত অন্যায়। কিন্তু যে ভাবে মঞ্চেই নেতারা ওঁকে মারধর করল, দিদি আর অভিষেক একটু বিবেচনা করুন।” এর পরেই অনুযোগের সুরে তিনি বলেন, “বদলা নয়, বদল চাই এই ছিল স্লোগান। তা হলে কেন এমন হল, প্রশ্ন করব দিদিকে।”

প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে এ দিন ধরেননি অভিষেক। জবাব দেননি এসএমএসের।

তবে দেবাশিস কেন এই কাণ্ড ঘটালেন, তা তাঁর কাছেও স্পষ্ট নয় বলে দাবি শিবানীদেবীর। তিনি বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে ছেলেকে এমন করার কারণ জিজ্ঞাসা করেছি, ও চুপ থেকেছে। শুধু বলছে, ওকে আশ্রমে নিয়ে যেতে।” প্রৌঢ়ার বক্তব্য, দেবাশিস কোনও কারণে মাথা গরম করে বা কারও প্ররোচনায় এই কাজ করে থাকতে পারেন। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে, তা সামনে আসবে।

শিবানীদেবী এ দিন জানিয়েছেন, তাঁর ও দেবাশিসের মনোরোগের সমস্যা রয়েছে। দু’জনেই দীর্ঘ পনেরো বছর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাও করাচ্ছেন। তাঁদের পরিবারে অধ্যাত্ম-চর্চার চল রয়েছে এবং ২০১২ সালে পলিটেকনিক পাশের পরে দেবাশিসেরও সে বিষয়ে আগ্রহ বাড়ে। দীর্ঘদিন দেবাশিসের চিকিৎসা করেছেন তমলুক শহরের প্রবীণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সৌমেন মাইতি। তাঁর অনুমান, বছর চারেক আগে জমি সংক্রান্ত গোলমালে দেবাশিসের বাবা দেশবন্ধু আচার্য যখন তমলুকের বল্লুক গ্রামের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন, সেই সময়কার অশান্তি দেবাশিসের মনে রেখাপাত করেছিল। তিনি বলেন, “দেবাশিসের আচরণ অসংলগ্ন ছিল। ওর বাবাকে বলেছিলাম, ভাল মনোবিদ দেখাতে। কিন্তু ওঁরা আমার কাছেই চিকিৎসা করিয়েছেন।”

অভিষেককে চড়-ঘুষি মারার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দেবাশিস এখনও তমলুক হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস জানান, ওই যুবকের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে মাঝেমধ্যে তিনি অসংলগ্ন কথা বলছেন। প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নেবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

debasish acharya abhisekh bandyopadhyay manhandled panskura tmc mother shibani acharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy