Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভোট মিটেছে, হানাহানি থামেনি জেলায়

ভোটের দিন তবু কিছুটা নজরদারি ছিল। চতুর্থ দফার ভোট মিটতেই অশান্তি ছড়াল আসানসোল ও মেদিনীপুরে। উঠল বাড়িতে হামলা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।

আসানসোলের সালানপুরে ভাঙচুর করা হয়েছে কংগ্রেস নেতার বাড়ি।  ছবি: শৈলেন সরকার।

আসানসোলের সালানপুরে ভাঙচুর করা হয়েছে কংগ্রেস নেতার বাড়ি। ছবি: শৈলেন সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০৩:৩০
Share: Save:

ভোটের দিন তবু কিছুটা নজরদারি ছিল। চতুর্থ দফার ভোট মিটতেই অশান্তি ছড়াল আসানসোল ও মেদিনীপুরে। উঠল বাড়িতে হামলা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।

আসানসোল বুধবার ভোটের দিনই নানা এলাকায় গোলমাল বেধেছিল। বুথ দখলের চেষ্টা, রিগিংয়ের অভিযোগও তুলেছিল রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। বৃহস্পতিবার আসানসোলের সহকারী রিটার্নিং অফিসার অমিতাভ দাসের কাছে ৬৬টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সিপিএম। কংগ্রেসও পাঁচটি বুথে ফের ভোট চেয়েছে। বিজেপি অবশ্য কোনও আবেদন জানায়নি। তাদের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র ব্যাখ্যা, “পুনর্নির্বাচন মানে আবার ছাপ্পা, বহিরাগতদের আনাগোনা, গণ্ডগোলের আশঙ্কা। তাই আমরা কোথাও ফের ভোট নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি না।”

বুধবার রাতেই পাণ্ডবেশ্বরের রেলপাড় এলাকায় তৃণমূলের পোলিং এজেন্ট তাপস দাসের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। তাপসবাবুর অভিযোগ, “আমার স্ত্রী ও মেয়ে বোমায় জখম হয়েছে। তাদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছি।” ওই রাতে বারাবনি ও সালানপুরেও যুব তৃণমূলের কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সালানপুরের কল্যা গ্রামের কংগ্রেস নেতা উত্তম রায়ের অভিযোগ, বুথ দখলে বাধা দেওয়ায় রাতে তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাদের এজেন্টের বাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম।

ভোটের দিন দুপুরে বারাবনির ছোটকোড়া গ্রামের বুথে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছিল। পুলিশের হস্তক্ষেপে তা মিটলেও রাতে তাদের দুই কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। আসানসোলের সিপিএম প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, “যেখানেই তৃণমূল বুথ দখলে বাধা পেয়েছে, ভোট মিটতেই আমাদের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়েছে।” তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনের পাল্টা দাবি, “অবাধ ভোট হয়েছে। আমাদের কেউ হামলা চালায়নি।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়েও সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল। বুধবার রাতে বেলদার তুতরাঙা পঞ্চায়েতের তরুয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রের খবর, তরুয়ার প্রাথমিক স্কুলের বুথ থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে কয়েক জন সিপিএম কর্মীর বাড়ি।

অশান্তির পর জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামে আতঙ্কিত
বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

বুধবার দুপুরে কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে লাগানো সিপিএমের পোস্টার ছিঁড়তে থাকেন বলে অভিযোগ। সিপিএমের লোকেরা ছুটে এলে দু’পক্ষে বচসা হয়। তবে এলাকায় পুলিশি টহল থাকায় বিষয়টি গড়াতে পারেনি। সন্ধ্যায় ভোটকর্মী ও পুলিশ এলাকা ছাড়লে ফের ওই স্কুল লাগোয়া ফুটবল মাঠে দু’দলের গোলমাল বাধে। পুলিশ গেলে ঘটনাস্থল ছেড়ে সকলে পালিয়ে যায়।

অভিযোগ, সেই সময়ই সিপিএম কর্মী অজয় বর, সুজয় পাত্র, দীপক বর ও ঝন্টু সাঁতরার বাড়িতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ভাঙচুর চালায়। বাধা দিতে গেলে অজয়বাবুর স্ত্রী সন্ধ্যা বরের চোখের কাছে ইট এসে লাগে। এক সিপিএম কর্মীর স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছে। তাঁকে বৃহস্পতিবার সকালে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই ঘটনায় আহত দুই তৃণমূল সমর্থককেও বুধবার রাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেলদা থানা অবশ্য জানায়, বুধবার রাতে ওই এলাকার কিছু বাড়ির টালি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই সবাই পালিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

political violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE