Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেই রাতেই জেলে ভরে দিতাম, অনুব্রতই অস্ত্র বুদ্ধের

বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ তুলে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারকে কড়া আক্রমণ করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকলে অনুব্রতকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিতেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নৈহাটি শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৮
Share: Save:

বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ তুলে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারকে কড়া আক্রমণ করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকলে অনুব্রতকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিতেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

নৈহাটির রেল মাঠে রবিবার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুভাষিণী আলির সমর্থনে বামফ্রন্টের সমাবেশে দলের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধবাবু বলেছেন, “জেলার এক নেতা বলছে, বিরোধীদের ঘর জ্বালিয়ে দেবে। পুলিশ বাঁচাতে গেলে তাদের বোমা মারতে বলছে। আর এখন সেই বোমা মারা নেতাকে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ঘুরছেন! কার পাল্লায় পড়েছি?” এই সঙ্গেই প্রাক্তনের সংযোজন, “আমিও তো দশ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম।

আমরা থাকলে আগে সেই রাতেই জেলে ভরতাম! তার পরে অন্য ব্যবস্থা। মানুষ মরে যাবে, আর এর প্রতিক্রিয়া হবে না?”

প্রসঙ্গত, বাম জমানার শেষ দিকে গত বিধানসভা ভোটের আগে আলিমুদ্দিনে দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন শাসনের সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার। আলিমুদ্দিনে তখন উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুও। বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মজিদের বিরুদ্ধে তখন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।

তিনি কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কার্যালয়ে বৈঠক করে বললেন এবং পুলিশ কেন কিছু বলল না, এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে বুদ্ধবাবুর নির্দেশেই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল মজিদকে।

আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে এ দিনও রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “তিন বছরে এ রাজ্যে যে পাপ চলছে, মানুষ দেখতে পাচ্ছেন! একটি মেয়ে মারা গেল, তার বাবা-মাকে টাকা দিয়ে বলল, বেশি কথা বলবে না। যারা এই ঘটনায় যুক্ত সেই দুষ্কৃতীরা পুলিশ পাহারায় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে গেল। মহিলাদের উপরে আক্রমণ কমবে না আরও বাড়বে, তা কেউ বলতে পারবে না!”

আর্থিক নীতিতে কংগ্রেস এবং বিজেপি-র যে বিশেষ ফারাক নেই, তা বুঝিয়েই এ দিন বুদ্ধবাবু বলেন, “এই কারণেই সংসদে কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী ভোট বেশি থাকা দরকার। কারণ, আমরা বামপন্থীরা নেতা নয়, নীতির কথা বলি।” নৈহাটির এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রবীণ নেতা অশোক ঘোষ, প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎ তোপদার, প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডু-সহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। বিরোধীদের সমালোচনার পাশাপাশিই ব্যারাকপুরের প্রার্থী সুভাষিণীর মা, প্রয়াত লক্ষ্মী সহগল ও নেতাজির প্রসঙ্গ তুলে বুদ্ধবাবু বলেন, “নেতাজি ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছিলেন। যে ভারত উনি গড়তে চেয়েছিলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস লক্ষ্মী সহগলের মেয়ে সেই ভারত গড়তে উদ্যোগী হবেন।”

প্রার্থী সুভাষিণীর বক্তব্য, “ওঁরা শুধু শিলান্যাস করেছেন। কোনওটাই হয়নি। ১২ তারিখ ব্যারাকপুর কেন্দ্রের ১২ লক্ষ ভোটার সচেতন ভাবে ভোট দেবেন!” আর তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে খোঁচা দিয়ে প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎবাবু বলেন, “দীনেশের কোনও ভোট নেই। রাজ্যে ৪২টা কেন্দ্রে কারও ভোট নেই! সব ভোট মুখ্যমন্ত্রীর! উনি সততার প্রতীক, সারদার প্রতীক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

anubrata mondal buddhadeb bhattacharjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE