Advertisement
E-Paper

সাদা কাগজে লিখে ‘পাশ’ দিল থানা, ইডেনে প্রাপ্তি মার

নতুন জামাইয়ের আবদার বলে কথা! তা-ও সোনাদানা নয়, নেহাতই বিনা পয়সার একটা পাস। ভোর থাকতে বসিরহাট থানায় তাই হত্যে দিয়েছিলেন শ্বশুর কল্লোল বসু (নাম পরিবর্তিত)। “ইডেনের একটা পাস দিন। জামাই বলছে, পাস না পেলে জামাইষষ্ঠীর আসনেই বসবে না।” কল্লোলবাবু বসিরহাটের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক কর্মী। সকলে এক ডাকে চেনে। একমাত্র মেয়ের সবে বিয়ে হয়েছে। নতুন জামাইকে একখানা পাস জোগাড় করে দিতে না পারলে মান থাকে না। তাঁর কাতর প্রার্থনায় বিব্রত থানার পুলিশ অফিসারেরাও।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:৫৫

নতুন জামাইয়ের আবদার বলে কথা! তা-ও সোনাদানা নয়, নেহাতই বিনা পয়সার একটা পাস। ভোর থাকতে বসিরহাট থানায় তাই হত্যে দিয়েছিলেন শ্বশুর কল্লোল বসু (নাম পরিবর্তিত)। “ইডেনের একটা পাস দিন। জামাই বলছে, পাস না পেলে জামাইষষ্ঠীর আসনেই বসবে না।”

কল্লোলবাবু বসিরহাটের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক কর্মী। সকলে এক ডাকে চেনে। একমাত্র মেয়ের সবে বিয়ে হয়েছে। নতুন জামাইকে একখানা পাস জোগাড় করে দিতে না পারলে মান থাকে না। তাঁর কাতর প্রার্থনায় বিব্রত থানার পুলিশ অফিসারেরাও। পাস দেবেন কোথা থেকে? বসিরহাট থানায় তো ইডেনের কোনও পাসই আসেনি। আরও উৎসাহী যুবক এসে ভিড় জমিয়েছে থানায়। মাথাটাথা চুলকে পুলিশকর্মীরা ঠিক করেন, সাদা কাগজে নাম-পরিচয় লিখে থানার সই-সিল মেরে দেওয়া হবে সকলকে।

কিন্তু ওই কাগজ দেখালে ঢুকতে দেবে কি? ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করেছিলেন এক বয়স্ক কনস্টেবল। বাকিদের দাবড়ানিতে দমে গেলেন। বসিরহাট থানার আইসি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘নাছোড় মানুষকে বোঝানোই যায়নি, আমাদের থানায় কোনও পাস আসেনি। তাই শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জনের নাম-পরিচয় লিখে থানা থেকে সই-সিল মেরে ছেড়ে দিই।”

সন্ধের দিকে হাসতে হাসতে বসিরহাট লোকাল থেকে নামছিলেন দুই যুবক। বললেন, “কলকাতা পুলিশ তো সাদা কাগজে শংসাপত্র দেখে থ। বলবার চেষ্টা করছিল, এ সব নিয়ে ঢোকা যাবে না মাঠে। কিন্তু পিছন থেকে ভিড়ের ধাক্কা খেয়ে কেমন যেন ভাসতে ভাসতে ঢুকে পড়লাম।”

কেউ কেউ আবার মাথা খাটিয়ে বসিরহাট থানার শংসাপত্র নিয়ে কলকাতার কয়েকটি থানায় হাজির হন। ইডেনে ঢোকার পাস মেলে সেই শংসাপত্র দেখিয়ে। কিন্তু সে সব হাতে নিয়েও অনেকে ভিড়ের গুঁতোয় আর লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে-আসা পুলিশের ভয়ে মাঠে ঢুকতে পারেননি।

আর কী হল নতুন জামাইয়ের?

সন্ধে পার করে বাবাজি বিধ্বস্ত অবস্থায় নামলেন বসিরহাট স্টেশনে। পাঞ্জাবির বোতাম ছিঁড়ে গিয়েছে। সাদা পাজামায় ধুলো-মাটি। বললেন, “থানার পাশ হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মাঠে ঢুকতে যাব, এমন সময়ে একদল লোক এমন ভাবে দৌড়ে এল যে আমরা লাইন ছেড়ে ছিটকে গেলাম। পুলিশও তেড়ে এল লাঠি হাতে। ধাক্কায় জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফর্দা-ফাঁই।” গজগজ করতে করতে বললেন, “দেখছি বউয়ের কথা শুনলেই ভাল ছিল।” জানা গেল, ক্রিকেট-পাগল স্বামীকে ভাল পরামর্শই দিয়েছিলেন নববধূ। বলেছিলেন, “এত হাঙ্গামা করে কী লাভ? চলো, দুপুরের শো-এ বরং ‘বাড়ি তার বাংলা’ দেখে আসি!”

nirmal basu ipl kkr eden gardens
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy