Advertisement
E-Paper

সারদা রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন কমিশনের সদস্যেরই

মেয়াদ শেষের দিনে রাত পৌনে ১০টায় রিপোর্ট লেখা শেষ করে অফিস ছেড়েছিলেন সারদা কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন। সেই রিপোর্ট সরকারের হাতে আসার আগেই তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। প্রশ্ন তুললেন কমিশনেরই এক সদস্য, অম্লান বসু। বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বাধীন সারদা কমিশনে আরও দু’জন সদস্য ছিলেন। অম্লানবাবু এবং যোগেশ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫০

মেয়াদ শেষের দিনে রাত পৌনে ১০টায় রিপোর্ট লেখা শেষ করে অফিস ছেড়েছিলেন সারদা কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন। সেই রিপোর্ট সরকারের হাতে আসার আগেই তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। প্রশ্ন তুললেন কমিশনেরই এক সদস্য, অম্লান বসু।

বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বাধীন সারদা কমিশনে আরও দু’জন সদস্য ছিলেন। অম্লানবাবু এবং যোগেশ চট্টোপাধ্যায়। দু’জনের কেউই শেষ দিন, অর্থাৎ ২২ অক্টোবর কমিশনে উপস্থিত ছিলেন না। রাত পর্যন্ত কমিশনে থেকে রিপোর্ট তৈরি করে যান বিচারপতি সেন। আজ অম্লানবাবু দাবি করেন, “ওই দিন রাতে যে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে, সেই ব্যাপারে আমাকে কিছু বলাই হয়নি। কমিশন তিন সদস্যের। তাই রিপোর্টে তিন জনের সই থাকাই বাঞ্ছনীয়।” কমিশনের আর এক সদস্য যোগেশ চট্টোপাধ্যায়ও এখন ছুটিতে, রাজ্যের বাইরে। তাই তিনিও রিপোর্টে সই করেননি। অম্লানবাবুর বক্তব্য, “বুধবার রাতে তৈরি করা রিপোর্ট শ্যামলবাবুর একান্তই ব্যক্তিগত। তা কমিশনের রিপোর্ট নয়। সরকারের তা গ্রহণ করা উচিত নয়।”

তবে রিপোর্টে যে তিন জনের সই থাকা উচিত ছিল, তা কার্যত মেনে নিয়েছেন শ্যামলবাবুও। শুক্রবার তিনি বলেন, “কেউ যদি অনুপস্থিত থাকেন, আমি কী করতে পারি? কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি রিপোর্ট তৈরি করে দিয়েছি।” এই রিপোর্ট কি সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? শ্যামলবাবুর বক্তব্য, “সেটা সরকার বিবেচনা করবে।”

রাজ্য সরকার অবশ্য রিপোর্টটি গ্রহণ করবে না বলেই স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর। দফতরের এক অফিসার এ দিন বলেন, “চূড়ান্ত রিপোর্টে সব সদস্যের সই থাকা জরুরি। রিপোর্টে তা নেই। তাই এই রিপোর্ট গ্রহণ যায় না। তবে ২৭ অক্টোবর নবান্ন খোলার পরেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তবে প্রশাসনের অন্দরমহলের একটি সূত্রের খবর, কমিশনের রিপোর্ট সম্পর্কে সরকার এখনও অবধি যা জেনেছে, সেটা খুব স্বস্তিদায়ক নয়। রিপোর্ট গ্রহণ করা নিয়ে আপত্তির সেটাও একটা কারণ। রিপোর্টে কী বলা হয়েছে? কমিশন সূত্রের খবর, রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, সারদার যে সব আমানতকারীর টাকা ফেরত দেওয়া যায়নি, তাঁদের টাকা ফেরত দিক রাজ্য সরকার।

সোমবারের আগে নবান্ন যে খুলবে না, ২২ তারিখই সে কথা জানত কমিশন। তাই সে দিন রাত দশটার পরে কমিশনের কয়েক জন অফিসার রিপোর্ট নিয়ে রওনা হন নবান্নে। কমিশন সূত্রের খবর, নবান্নের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট জমা দিতে গেলে তাঁদের বলা হয়, ওই রিপোর্ট গ্রহণ করা হবে না। বিষয়টি জানানো হয় কমিশনের চেয়ারম্যানকে। চেয়ারম্যান নির্দেশ দেন, পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানাতে। পুলিশ কমিশনার জানান, এ ব্যাপারে পুলিশের কিছু করার নেই। ফলে রাত ১১টা নাগাদ কমিশনের দফতরে ফিরে রিপোর্ট রেখে বাড়ি যান অফিসারেরা। সারদা কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্ট তাই এখনও রাজ্য সরকারের হাতে আসেনি।

শুক্রবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি রিপোর্ট বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে গ্রহণ করা হয়। কমিশনের শেষ দিনে ওই সময়ের মধ্যে কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি। তাই সরকারের হাতে কমিশনের কোনও রিপোর্ট নেই।”

এ বার কৈফিয়ৎ চাইলেন বিমান

সেন কমিশন নিয়ে বাম শিবিরের ভিতরের মতপার্থক্য সামনে চলে এল শুক্রবার। এর আগে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেছিলেন, শাসক দলকে আড়াল করতে কমিশন গড়েন মুখ্যমন্ত্রী। কমিশনের ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এ দিন কিন্তু কমিশন কেন বন্ধ করা হলো, তার কৈফিয়ৎ চেয়ে বসলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। দাবি করলেন, কমিশনকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। কেন এই দু’রকম কথা? বাম শিবিরের একাংশের মত, সেন কমিশনকে একেবারে নস্যাৎ করে দিলে প্রতারিত আমানতকারীদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই এমন অবস্থান নিয়েছেন বিমানবাবু। কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি তুলেছে বিজেপি-ও। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “কমিশন তদন্ত করে কী পেল, কার কার নাম উঠে এল, জনগণ জানতে চায়।”

saradha scam report commission member
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy