E-Paper

সরকার বদল জরুরি ছিল, শান্তি ফেরাও দরকার

২৫ বছর হল নেপালে আছি। রাজধানী কাঠমান্ডুর বিশাল বাজার এলাকায় স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকি। কাঠমান্ডুতেই আমার সোনার দোকান আর কারখানা। মঙ্গলবার বাড়ির সামনে স্থানীয় ‘জনসেবা’ থানায় আগুন লাগাতে নিজের চোখে দেখেছি।

বিকাশ রায়

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:১৫
ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া নেপালের পার্লামেন্টের একাংশ। বুধবার কাঠমান্ডুতে।

ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া নেপালের পার্লামেন্টের একাংশ। বুধবার কাঠমান্ডুতে। ছবি: রয়টার্স।

দু’দিন ধরে ঘরবন্দি। মঙ্গলবারই বাড়ির সামনে থানায় আগুন লাগাতে দেখলাম, চলল অস্ত্র লুট। বুধবারও চারপাশ উত্তপ্ত। শহর জুড়ে শুধু গোলা-গুলির শব্দ আর খুন-জখম। নেপালে সরকার পরিবর্তন জরুরি ছিল। দ্রুত শান্তি ফিরে আসাটাও দরকার।

২৫ বছর হল নেপালে আছি। রাজধানী কাঠমান্ডুর বিশাল বাজার এলাকায় স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকি। কাঠমান্ডুতেই আমার সোনার দোকান আর কারখানা। মঙ্গলবার বাড়ির সামনে স্থানীয় ‘জনসেবা’ থানায় আগুন লাগাতে নিজের চোখে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট-সহ যে চত্বরে অশান্তির আগুন জ্বলছে, সেই সব জায়গাও বাড়ি থেকে মিনিট কুড়ির দূরত্বেই। তবে ও-দিকে আর যাইনি।

রাস্তাঘাট শুনশান। মানুষজনও বেরোচ্ছেন না। সন্ধ্যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান খুলছে কয়েক ঘণ্টার জন্য। মোবাইলে সব সময় নেটওয়ার্ক থাকছে না। বাড়িতে থাকলেও অস্থির লাগছে।

মূলত, অল্পবয়সিরা রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

নেপালের এই সরকারের প্রতি আমাদের মতো সাধারণ ব্যবসায়ীদেরও কিন্তু অসন্তোষ রয়েছে। সরকারের খামখেয়ালিপনায় আমাদের সোনার ব্যবসায় অনেক লোকসান হয়েছে। যখন-তখনতল্লাশি হয়েছে। কাগজপত্রে উনিশ-বিশ হলেই মোটা টাকা আদায় করেছে। এখন কারিগরদের বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। তার উপরে এই অশান্তিতে স্ত্রী রঞ্জু, সতেরো বছরের ছেলেপ্রিন্স আর বছর পনেরোর মেয়ে প্রীতিকাকে নিয়ে চিন্তাও হচ্ছে। তবে আমার ছেলে যুব সম্প্রদায়েরসরকার বিরোধী আন্দোলনকে নৈতিক ভাবে সমর্থন করছে। ছাত্রদের উপরে সরকারের গুলি চালানো ওমানতে পারেনি।

১৬ বছর বয়সে আমি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ২ ব্লকের সয়লা গ্রামের বাড়ি ছাড়ি। প্রথমে মুম্বইয়ে ছিলাম। সেখানেই গয়না তৈরিতে হাতেখড়ি। পরে কাঠমান্ডুতে আসি কারিগর হিসাবে। ক্রমে দোকান, কারখানা করেছি। দাসপুরের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। দু’দিন মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। কথা না হওয়ায় ওঁরা খুব চিন্তায় ছিলেন।

এখন একটাই চাওয়া— এই রক্তপাত, অশান্তি বন্ধ হোক। দ্রুত চেনা চেহারায় ফিরুক কাঠমান্ডু।(লেখক পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী)

অনুলিখন: অভিজিৎ চক্রবর্তী

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nepal Violence Nepal Nepal Unrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy