Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
জানাল আফগানিস্তান

দু’বছর আগে করাচিতে মৃত্যু মোল্লা ওমরের

যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে দু’বছর আগে করাচির এক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তালিবান শীর্ষ নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমর। জানাল আফগানিস্তান সরকার।প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির দফতর থেকে আজ রাতে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘২০১৩-র এপ্রিলে পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে তালিবান নেতা মোল্লা ওমরের।’’

সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪০
Share: Save:

যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে দু’বছর আগে করাচির এক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তালিবান শীর্ষ নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমর। জানাল আফগানিস্তান সরকার।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির দফতর থেকে আজ রাতে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘২০১৩-র এপ্রিলে পাকিস্তানে মৃত্যু হয়েছে তালিবান নেতা মোল্লা ওমরের।’’ আজই আফগানিস্তানের প্রশাসনিক কর্তা, নিরাপত্তা পরিষদের আধিকারিক ও একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করে দু’বছর আগে ওমরের মৃত্যুর কথা প্রকাশ করে বিবিসি। দুপুরে আফগানিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেলেও সেই খবর সম্প্রচারিত হয়। সেখানে দাবি করা হয়, ফিদাই মাহাজ নামে এক তালিবান স্‌প্লিন্টার দল গত সপ্তাহেই ওমরের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তাদের দাবি, মোল্লা ওমরকে কবর দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ জাবুল প্রদেশে। এ সবের পরেই নড়েচড়ে বসে আফগান সরকার। দুপুর আড়াইটে নাগাদ কাবুলে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে আশরাফ ঘানির মুখপাত্র জাফর হাসমি বলেন, ‘‘ওমরের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরের কথা আমরা জানতে পেরেছি। খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।’’ রাতেই প্রশাসন মেনে নেয়, খবর সত্যি। আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র আব্দুল হাসিব সিদ্দিকিও ওমরের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেন। তবে এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পাক প্রশাসন।

আফগান সরকার ওমরের মৃত্যুর কথা জানালেও রাত পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি তালিবান। ওমরের জায়গায় নতুন কাউকে বসানো নিয়ে কথাবার্তা যে চলছে তা আগেই জানিয়েছে পাকিস্তানের কোয়েটা ও পেশোয়ারের দুই মুখ্য তালিবান কাউন্সিল। তালিবানের অন্য একটি শাখার মুখপাত্র কারি ইউসুফ আহমেদি ওমরের মৃত্যুর খবর উড়িয়ে দেন। জাবিউল্লাহ মুজাহিদ নামে আর এক তালিবান মুখপাত্র জানান, শীঘ্রই তালিবান বিবৃতি প্রকাশ করবে।

তালিবান শীর্ষ নেতা ওমরকে ২০০১ সালের পরে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। দেখা মেলেনি কোনও ভিডিও বা ছবিতেও। ২০০৭ সালের পরে ওমরের কাছ থেকে আর কোনও নির্দেশ পাননি তালিবান শীর্ষ নেতারাও। ৯/১১-র ঘটনার পর ওমরই আল-কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে মদত দিয়েছিলেন বলে দাবি করে মার্কিন গোয়েন্দারা। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত রুশদের সঙ্গে ল়ড়াই করার সময়ে একটা চোখ হারান ওমর। এক হাতের কব্জিও উড়ে যাওয়ায় সেখানে বসে লোহার রড। ওমরের শরীরের এই বিশেষ দু’টি চিহ্ন উল্লেখ করে আমেরিকা তার মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ১ কোটি ডলার।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবানের প্রধান পদে থাকা ওমরের এই দীর্ঘ অজ্ঞাতবাসে তাঁকে নিয়ে জল্পনা কম হয়নি। তিনি বেঁচে আছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে বারবার। তবে তাঁর নাম সামনে রেখেই এক ছাতার তলায় কাজ করে এসেছে তালিবানের বিভিন্ন ভগ্নাংশ। গত দু’বছরে অবশ্য ওমরের অসুস্থতা, তাঁর পরিবার ও জীবন নিয়ে তালিবানের অন্দরেই চর্চা বেড়ে গিয়েছিল বহুগুণ। সম্প্রতি, ইন্টারনেটে তার জীবনী প্রকাশ করে তালিবান। চলতি মাসেই তালিবানের সঙ্গে আফগান সরকারের শান্তি আলোচনার সময়েও ওমরের নাম করে এবং তাঁর উদ্ধৃতিতে তালিবান ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক লেখা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একাধিক শাখা ও ভগ্নাংশে বিভক্ত তালিবানের অস্তিত্ব বাঁচাতে ভরসা ছিল ওমরের নামটুকুই। সামনে না এলেও তাঁর নামেই এত দিন সংগঠনে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানে আল-কায়দা কার্যত ভেঙে পড়লেও ওমরের নাম সামনে রেখেই চলছিল সংগঠন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mullah Omar afganistan taliban america
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE