অবশেষে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছচ্ছে ঢাকায়। বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার সকালেই ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করবে ওই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। তবে ওই অ্যাম্বুল্যান্সে সওয়ার হয়ে খালেদা উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশের প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তবেই তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসকেরা।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যকরী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ সোমবার সকালে জানিয়েছেন যে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে অবতরণ করবে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সটি। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ৯টায় ঢাকা থেকে উড়ে যেতে পারবে ওই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সটি জার্মানির বিমানসংস্থা এফএআই গোষ্ঠীর।
তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, খালেদা এখনও সঙ্কটমুক্ত নন। দীর্ঘ বিমানযাত্রার ধকল তিনি নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে চিকিৎসকেরা। শনিবারই খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থার উপরেই তাঁর বাইরে যাওয়া নির্ভর করছে। খালেদার চিকিৎসা এবং বিদেশযাত্রার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে যুক্ত একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ওই সূত্রের দাবি, রবিবার রাত পর্যন্ত খালেদার শারীরিক অবস্থার নতুন করে কোনও উন্নতি বা অবনতি হয়নি।
খালেদাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা ছিল কাতারের। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ায় তারা সাহায্যের প্রস্তাব দেয়। বিএনপি জানিয়েছিল, কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স শনিবারই ঢাকায় পৌঁছোবে এবং রবিবার প্রবীণ নেত্রীকে নিয়ে তা লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবে। কিন্তু শুক্রবার রাতে জানা যায়, সেই তারিখও পিছিয়ে গিয়েছে। পরে জানানো হয়, কাতারের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। বিকল্প হিসাবে জার্মানি থেকে একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে ঢাকায় পাঠাচ্ছে কাতার সরকার।
গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে খালেদাকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে তাঁর নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। আগে থেকেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনির সমস্যা ছিল খালেদার। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। ধরা পড়ে হৃদ্যন্ত্রের সংক্রমণও। তাঁকে বিদেশযাত্রার উপযোগী রাখতে মরিয়া চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞেরা খালেদার চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন।