E-Paper

সরকারি মদতে সংখ্যালঘু পীড়ন, কাঠগড়ায় ইউনূস

অভিযোগ উঠেছে, জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি)-এর প্রাক্তন নেতা জসিমউদ্দিন রহমানি, যিনি ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যা-সহ সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত, তাঁকে বায়তুল মোকাররমের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:২৭
মুহাম্মদ ইউনূস।

মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের আমলে সংখ্যালঘু পীড়ন বাড়ছে বলে লাগাতার অভিযোগ উঠছে। ‘রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ’ নামে একটি সংস্থা সোমবার এক প্রতিবাদ পত্র প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিশানা করার জন্য আনসারুল্লা বাংলা টিম, সেনাবাহিনী এবং দেশের বিচার ব্যবস্থাকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই সংস্থার বিবৃতিতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার জন্য ইউনূসের নিন্দা করা হচ্ছে।

২০২৪ সালে দেশে পালাবদলের পর থেকে ক্রমাগত ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য, সদ্য বাংলাদেশ সফর করেছেন পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জ়া। ঘটনাচক্রে, তাঁর সফরের আগ দিয়েই বাংলাদেশে হিন্দু-বিরোধী জিগির চড়া হতে শুরু করেছে। ‘রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ’ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, গত ২৩ অক্টোবর, বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী বিক্ষোভের আয়োজন করে। সেখানে তারা দাবি তুলেছিল, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ঢাকায় এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ছাত্ররা উস্কানিমূলক স্লোগান দেয় এবং ইসকন সদস্যদের “ভারতের এজেন্ট” হিসেবে অভিযুক্ত করে তাদের গ্রেফতার ও বাংলাদেশ থেকে বিতাড়নের দাবি তোলে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযোগ উঠেছে, জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি)-এর প্রাক্তন নেতা জসিমউদ্দিন রহমানি, যিনি ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যা-সহ সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত, তাঁকে বায়তুল মোকাররমের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছিল।

গত ২৪ অক্টোবর সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি জেলার বর্মাচরিতে অবস্থিত আর্য্য কীর্তি বৌদ্ধ বিহারের জমি জোরপূর্বক দখল করে বলে অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, সেখানে একটি অস্থায়ী সেনা শিবির স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর একই জেলায় গুইমারা এলাকায় এক কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামা তিন যুবককে সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। গত ৫ মে বান্দরবানের থানচি এলাকায় খিয়াং জনগোষ্ঠীর চিংমা খিয়াংয়ের গণধর্ষণ ও হত্যা এবং ২০২৫ সালের জুলাই মাসে খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

‘রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ’-এর পরিচালক সুহাস চাকমার অভিযোগ, “২১ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী শ্রীরন্ত রায়কে সমাজমাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে। পরের দিন, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর আওতায় শ্রীরন্তকে কারাগারে পাঠান, যা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিচারব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্ত্রায়নের উদাহরণ।” বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্রকুমার নাথের বক্তব্য, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমানে দেশের প্রশাসন সে ব্যাপারে উদাসীন। ফলে হুমকি, নির্যাতনক্রমশ বাড়ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Muhammad Yunus Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy