আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবরোধ তুলল ইজ়রায়েল। সোমবার থেকে এখনও পর্যন্ত গাজ়ায় ১০০ ট্রাক ত্রাণ তারা ঢুকতে দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ কথা জানিয়েছে ইজ়রায়েল সেনা। কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে, এই সীমিত ত্রাণে কি গাজ়ার প্রায় ২১ লাখ মানুষের খিদে মিটবে কি?
ইজ়রায়েলি হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজ়া। ধারাবাহিক বোমাবর্ষণে প্রতি দিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। তৈরি হয়েছে খাদ্যসঙ্কট। সেই আবহে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, গাজ়ায় পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছোলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে ১৪ হাজার শিশুর! এর পরেই আন্তর্জাতিক স্তরে ইজ়রায়েলের উপর চাপ বাড়তে থাকে। ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং কানাডা প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এর পরেই অবরোধ তোলার কথা ঘোষণা করে ইজ়রায়েল। দীর্ঘ ১১ সপ্তাহ পর গাজ়ায় ঢুকল ত্রাণ।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক সহায়তা বিষয়ক কর্তা টম ফ্লেচার সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে বিপুল পরিমাণ মানবিক সহায়তার প্রয়োজন গাজ়ার। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ত্রাণ যদি না পৌঁছোয় গাজ়ায়, তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৪ হাজার শিশু মারা যাবে।’’
তার পরেও হামাসের বিরুদ্ধে ইজ়রায়েলের অভিযান থামেনি। বরং ইজ়রায়েলি বিমান হামলায় আধ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৩৮ প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা বিবিসিকে জানিয়েছেন। নেতানিয়াহুও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে গোটা গাজ়া ভূখণ্ডকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেবে ইজ়রায়েল। হামাস যদি বন্দিচুক্তি মানতে রাজি না হয়, তবে হামলা আরও বাড়বে।
প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বরের হামলার পরেই অভিযান শুরু করেছিল তেল আভিভ। কাতার, আমেরিকা এবং মিশরের উদ্যোগে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দু’পক্ষ। তবে প্রথম দফার ওই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্চের গোড়ায় ফের গাজ়ায় হামলা শুরু করে ইজরায়েলি সেনা। একই সঙ্গে গাজ়া ভূখণ্ডে খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করা-সহ নানা নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল।