প্রতীকী চিত্র।
উষ্ণায়নের আঁচ সুইস আল্পসেও! সদ্য প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ১৮৫০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত হিমবাহের দ্রুত গলনের ফলে সুইস আল্পসের কাছে তৈরি হয়েছে নতুন ১২০০টি জলাশয়। সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব অ্যাকোয়াটিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি যে গবেষণা চালিয়েছিল, তা প্রকাশিত হয়েছে আজ।
শুরুতে গবেষকদের অনুমান ছিল, হিমবাহ গলনের জেরে উদ্ভূত জলাশয়ের সংখ্যা হয়তো কয়েকশোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। সংখ্যাটা হাজার পেরিয়েছে দেখে চমকে গিয়েছেন তাঁরা। গবেষক দলটির প্রধান ড্যানিয়েল ওডারম্যাট জানিয়েছেন, শুধু গত এক দশকেই তৈরি হয়েছে ১৮০টি জলাশয়।
ধারাবাহিক ভাবে সুইস আল্পসের হিমবাহ গলনের বিষয়টি তুলে ধরেছে সুইস অ্যাকাডেমিকস অব সায়েন্সও। তাদের প্রকাশিত বার্ষিক সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গিয়েছে, শুধু গত এক বছরে হিমবাহের আয়তন সঙ্কুচিত হয়েছে দুই শতাংশ। এ ভাবেই যদি চলতে থাকে তা হলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতে চলেছে, ভেবে শিউরে উঠছেন পরিবেশবিদরা! কারণ, হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে এক দিকে যেমন সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাবে, তার সঙ্গে বহু উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং দ্বীপ তলিয়ে যাবে সমুদ্রে।
জ়ুরিখের ইটিএইচ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি-র ২০১৯ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি মেনে যদি উষ্ণতা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই ক্ষেত্রেও অ্যালপাইন হিমবাহের দুই-তৃতীয়াংশ গলে যেতে পারে অদূর ভবিষ্যতে।
সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব অ্যাকোয়াটিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মূল্যায়নে দেখা যাচ্ছে, সুইস আল্পসে হিম-গলনে উদ্ভূত জলাশয় তৈরির বিষয়টা ১৯৪৬ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেই সময়ে প্রতি বছর গড়ে আটটি করে জলাশয় তৈরি হচ্ছিল। তার পরে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০০৬ থেকে ২০১৬-র মধ্যে বছরে গড়ে ১৮টি করে জলাশয় তৈরি হতে থাকে। এই সময়ে ওই অঞ্চলে বার্ষিক জলস্তর বেড়েছে ৪০০ বর্গ মিটার।
গবেষক সংস্থাটি সতর্ক করে জানিয়েছে, যে ভাবে একের পরে এক জলাশয় ও জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আগামী দিনে ওই অঞ্চলে বিপুল বন্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর এমনটা ঘটলে বিপন্ন হয়ে পড়বে গোটা জনপদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy