Advertisement
E-Paper

আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সমকামী চিকিৎসক

একটা সময় ছিল, সমকামী হওয়ার ‘অপরাধে’ আয়ারল্যান্ডে খুন হয়ে যেতে হত। আর এখন? সেই আয়ারল্যান্ডেরই প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এক জন সমকামী! ঘটনাচক্রে তিনি আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূতও বটে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ১৬:১৮
লিও ভারাদকর। ছবি: টুইটার।

লিও ভারাদকর। ছবি: টুইটার।

একটা সময় ছিল, সমকামী হওয়ার ‘অপরাধে’ আয়ারল্যান্ডে খুন হয়ে যেতে হত। আর এখন? সেই আয়ারল্যান্ডেরই প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এক জন সমকামী! ঘটনাচক্রে তিনি আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূতও বটে।

লিও ভারাদকর। ফিনে গেইল পার্টির সদস্য। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে তিনি ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর ঠিক পিছনেই রয়েছেন, সে দেশের আবাসনমন্ত্রী সিমন কনভেনেস। পার্লামেন্ট এই মুহূর্তে বন্ধ। তাই আনুষ্ঠানিক ভাবে লিওকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়নি। আগামী ১৩ জুন পার্লামেন্ট চালু হলেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

বছর দুয়েক আগে পর্যন্তও আয়ারল্যান্ড এমন জায়গায় ছিল না। ২০১৫ সালে সে দেশে সমকামী বিয়ে বৈধতা পায়। তার আগের পথ আরও কঠিন ছিল। কেউ সমকামী, এ কথা প্রকাশ্যে এলেই তাঁকে সহ্য করতে হত নানা রকমের হেনস্থা। শুধু তাই নয়, সমকামী হওয়ার ‘অপরাধে’ ১৯৮৩ সালে ডেকল্যান ফ্লিন নামে এক ব্যক্তিকে খুন পর্যন্ত হতে হয়। খুন, তীব্র সামাজিক উপেক্ষা এবং অত্যাচারের সেই সময়টা এখন আর নেই। লিও-র মতো এক জন সমকামী মানুষের সে দেশের অন্যতম শীর্ষ পদে বসাটাও আসলে বিশ্ব দরবারে আয়ারল্যান্ডকে এক ধাপ তুলে ধরল। সাম্যতার অধিকার বজায়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেল আরও কয়েক কদম।

আরও পড়ুন: কঠিন ব্যাধি নিয়েই ইউপিএসসি-তে সফল ফেরিওয়ালার মেয়ে

লিও-র জন্ম এক গুজরাতি পরিবারে। বাবা অশোক ভারাদকার মুম্বইয়ে থাকতেন। ব্যবসায়িক সূত্রে সেখান থেকে আয়ারল্যান্ডে উড়ে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই মিরিয়াম নামে এক মহিলার সঙ্গে তাঁর পরিচয় এবং বিয়ে। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্ম হয় লিও-র। জন্মের পর ৩৮টা বছর সেখানেই কেটেছে। ডাবলিন থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। তখন সমকামিতা ছিল সে দেশের সমাজে ‘অপরাধ’। জানাজানি হলে তিরস্কারের সঙ্গে আইনি দণ্ডও জুটত কপালে। এমন একটা সামাজিক প্রেক্ষাপটেই প্রকাশ্যে নিজেকে সমকামী বলে জানান দিয়েছিলেন লিও।

সেখানেই থামেননি তিনি। সমকামীদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নামেন। লিও এবং আরও অনেকের এই লড়াই আংশিক সাফল্য পায় ১৯৯৩ সালে। সমকামিতা অপরাধ নয়, এ নিয়ে বিল পাশ করে আয়ারল্যান্ড পার্লামেন্ট। কিন্তু, সমকামী বিয়ে তখনও বৈধ হয়নি। সাম্যতা রক্ষার সেই আন্দোলন পূর্ণতা পায় ২০১৫ সালে। তার আগেই অবশ্য ওই বছরে প্রাকটিস ছেড়ে নির্বাচনে লড়েন লিও। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও হন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার পর লিও বলেছিলেন, ‘‘আমি সমকামী। তবে, এটা আমার পরিচয় নয়। আমি যেমন আধা-ভারতীয় রাজনীতিক নই, চিকিত্সক-রাজনীতিকও নই, তেমন সমকামী-রাজনীতিকও নই। এগুলো আমার চরিত্রের অংশমাত্র। আমার পরিচয় হতে পারে না।’’

লিও-র কথায় ভীষণ অনুপ্রাণিত হয়েছিল যুব সমাজ। আন্দোলন আরও তীব্র হয়। সে বছরই আয়ারল্যান্ডের ৭৬ শতাংশ মানুষ সমকামী বিয়ের পক্ষে ভোট দেন। জনগণের সেই ভোটের নিরিখেই আইনি সংশোধন আনে পার্লামেন্ট। সমকামী বিয়ে বৈধতা পায় আয়ারল্যান্ডে। পাশাপাশি, জনগণের ভোটে বিশ্বের প্রথম সমকামী বিয়েতে বৈধতাপ্রাপ্ত দেশ হিসাবে নজির গড়ে তোলে।

এ বার সে দেশেরই প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এক জন সমকামী।

Prime minister PM Ireland লিও ভারাদকর আয়ারল্যান্ড Gay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy