Advertisement
E-Paper

ধ্বংসস্তূপ সরাতেই বেরোচ্ছে একের পর এক লাশ! মায়ানমার জুড়ে হাহাকার, গৃহযুদ্ধে সাময়িক বিরতি ঘোষণা জুন্টা-বিরোধীদের

মায়ানমারের সামরিক সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত সেখানে ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা ১৬৪৪। আহত প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। এখনও অনেকের খোঁজ মেলেনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৮:১০
মায়ানমারের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।

মায়ানমারের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। ছবি: রয়টার্স।

ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা। মৃতের সংখ্যা ১৬০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরোধী গোষ্ঠী সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। জুন্টা-বিরোধী পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) জানিয়েছে, রবিবার অর্থাৎ, ৩০ মার্চ থেকে আগামী দু’সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলবে।

মায়ানমারের সামরিক সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত সেখানে ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা ১৬৪৪। আহত প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। এখনও অনেকের খোঁজ মেলেনি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারের কাজ চলছে। অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ভূমিকম্পে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু বাড়ি, মসজিদ এবং অন্যান্য ভবন ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মান্দালয়ের অনেক এলাকায় এখনও উদ্ধারকারী দল পৌঁছোতে পারেনি। উদ্ধারকাজে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতিও সেখানে নেই। শনিবার সেখানে খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর মরিয়া চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। যাঁরা আটকে আছেন, তাঁদের বাঁচাতে বহু মানুষ উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভিসের অনুমান, মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে ১০ হাজারের গণ্ডি।

শুক্রবার ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মায়ানমার। তার পর কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ‘আফটারশক’ হয় ৬.৭ মাত্রার। ওই দিন ১০ ঘণ্টায় পর পর ১৪টি ‘আফটারশক’ হয়। ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে জুন্টা সরকার। জুন্টার প্রধান আং লাইং শনিবার মান্দালয়ের কম্পন বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। মায়ানমারে প্রথম সাহায্য পাঠিয়েছে ভারত। শনিবার সকালেই বায়ুসেনার বিমান ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ইয়াংগন পৌঁছে যায়। প্রথম দফায় ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত। আরও চারটি বিমান পাঠানো হতে পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মায়ানমার এবং তাইল্যান্ড সরকারকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

ভারতের পাশাপাশি চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা, ইরান, মালয়শিয়া-সহ একাধিক দেশ সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে। চিন থেকে ৮২ জনের একটি উদ্ধারকারী দলকে পাঠানো হয়েছে মায়ানমারে। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। মায়ানমারকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের বার্তা দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়াও ২০ লক্ষ ডলারের ত্রাণ পাঠানোর কথা জানিয়েছে। মায়ানমারে ৪৯ জনের উদ্ধারকারী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া। পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ইরান এবং ইন্দোনেশিয়া।

২০২১ সালে মায়ানমারে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল সামরিক জুন্টা সরকার। পিডিএফ সেই থেকে তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। চার বছর ধরে গৃহযুদ্ধে দীর্ণ এই দেশটির অনেক অংশ বিরোধীদের দখলে। সেখানে জুন্টা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সেই অংশে উদ্ধারকার এবং ত্রাণসামগ্রী পাঠাতে সমস্যা হচ্ছিল। ওই সমস্ত অংশে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও এখনও স্পষ্ট হয়নি। পিডিএফ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Myanmar Myanmar Earthquake Junta Army Rescue Operation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy