ফাইল ছবি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মলের মতো প্রকাশ্য স্থানে একের পর এক বন্দুক-তাণ্ডবের পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকার নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্রের উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবতের জন্য বিল আনা হয়েছিল। গতকাল ভোটাভুটিতে সেই বিল পাশ হল। ২১৭-২১৩ ফলাফলে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্রে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বার ওই বিল পাঠানো হবে উচ্চকক্ষ সেনেটে। সেখানেও এই বিল পাশ হলে আইনে পরিণত হবে বিষয়টি।
সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক, উভালডে, বাফেলো, টেক্সাস, ইলিনয়ে বন্দুক হামলা প্রাণ কেড়েছে অনেকের। তার জেরে দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র যেমন, বন্দুক, রাইফেলে নিষেধাজ্ঞার দাবি উঠছিল আমেরিকায়। সেই দাবি মেনেই গতকাল এই বিল নিয়ে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়। ডেমোক্র্যাটরা তাতে বিপুল সাড়া দিলেও রিপাবলিকানদের মধ্যে মাত্র দু’জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সে জন্যই আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেনেটে এই বিল না-ও পাশ হতে পারে। কারণ, সেনেটে ১০০ জন সদস্যের মধ্যে ডেমোক্র্যাট সদস্য ৪৮ জন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন ২ জন নির্দলও। বিল পাশ করাতে অন্তত ১০ জন রিপাবলিকান সদস্যেরওসম্মতি প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত ১৯৯৪ সালে আমেরিকান কংগ্রেসে অ্যাসল্ট রাইফেল ও বড় ধরনের হামলায় সক্ষম এমন আগ্নেয়াস্ত্রের উপরে ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে মত দিয়েছিলেন আইনপ্রণেতারা। কিন্তু ২০০৪ সালে সেই মেয়াদ ফুরোতেই ফের শুরু হয় অস্ত্র কেনাবেচা।
হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গতকালের ভোটাভুটি শেষে এই বিল পাশকে দেশে বন্দুক-হিংসার প্রতিরোধে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।
এই বিলটি আইনে পরিণত হলে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি, আমদানি, তৈরির ক্ষেত্রে বলবৎ হবে নিষেধাজ্ঞা।
উভালডেতে স্কুল পড়ুয়াদের মৃত্যুর পরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সমস্ত আইনপ্রণেতাদের কাছে অ্যালস্ট রাইফেলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন জানিয়েছিলেন। একান্ত যদি তাতে সায় না-ও দেন আইনপ্রণেতারা অন্তত এ ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে ২১ বছর করার আবেদনও রাখেন প্রেসিডেন্ট। যদিও বরাবরের মতোই সেই প্রস্তাবে সায় দেননি রিপাবলিকানরা।
বাইডেন বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকায় প্রতি বছর বন্দুক হামলার জেরে প্রাণ খোয়ান ৪০ হাজার নাগরিক। দেশে সব চেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বন্দুক-তাণ্ডবেই। অ্যাসল্ট রাইফেল এবং এ ধরনের প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্রের উপরে নিষেধাজ্ঞা প্রচুর মানুষের জীবন রক্ষা করবে।’’
যদিও রিপাবলিকানরা নিজের অবস্থান বদল করেননি। হাউসে কেন্টাকির প্রতিনিধি রিপাবলিকান পার্টির জেমস কোমার এই প্রসঙ্গ বলেছেন, ‘‘হিংসাত্মক অপরাধের জন্য বন্দুক নির্মাতারা দায়ী নন। এ জন্য দায়ী অপরাধীরা।’’ আত্মরক্ষার্থে যাঁরা বন্দুক ব্যবহার করেন তাঁদের অধিকার যাতে রক্ষিত হয়, তার পক্ষেই থাকবেন বলেও জানিয়েছেন ওই রিপাবলিকান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy