Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Sharks Death

পাঁচ লাখ হাঙরের প্রাণের বদলে মিলবে প্রতিষেধক!

হাঙর ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রাণীর লিভারে থাকে তেলটি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাঙরের লিভার অয়েলই নেওয়া হয়।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা      
রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৭
Share: Save:

নথিপত্র বলছে, দশ লাখের উপরে মৃত্যু হয়েছে করোনা-সংক্রমণে। কিন্তু আসল সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। এমনটাই আজ দাবি করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। বিশ্বে সংক্রমিত ৩ কোটি ৪২ লক্ষেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে রেকর্ড গতিতে টিকা তৈরির চেষ্টা চলছে। যাকে বলে, ‘ফাস্ট-ট্র্যাক’ গবেষণা। যার পরিণামে হয়তো মরতে হবে অন্তত ৫ লক্ষ হাঙরকে!বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একটি সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষাকারী সংগঠন। তাদের বক্তব্য, মানুষের প্রাণ বাঁচাতে যে ভাবে হুড়োহুড়ি করে পরীক্ষা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, তাতে হয়তো মৃত্যুদণ্ড পেতে হবে ৫ লক্ষ হাঙরকে।

কিন্তু কেন? বেশির ভাগ ভ্যাকসিন বা টিকাতে ‘অ্যাজুভ্যান্ট’ লাগে। এটি একটি ফার্মাকোলজিক্যাল এজেন্ট, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই উপাদানটি মেলে হাঙরের লিভারে। ভ্যাকসিনের দ্রুত ও কার্যকরী প্রভাব পেতে উপাদানটি জরুরি। অতএব ব্যাপক সংখ্যায় গবেষণা এবং ব্যাপক পরিমাণে টিকা তৈরির জন্য হাঙর নিধন জরুরি হয়ে পড়ছে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে প্রাণ যাবে লক্ষ লক্ষ হাঙরের।

সব ভ্যাকসিনেই বিভিন্ন অ্যাজুভ্যান্ট ব্যবহার করা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে লাগে ‘স্কুইলিন অয়েল’। কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। হাঙর ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রাণীর লিভারে থাকে তেলটি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাঙরের লিভার অয়েলই নেওয়া হয়। ওই সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষাকারী সংগঠনটি দাবি করেছে, শুধু আমেরিকার জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন তৈরি করতেই অন্তত ২১ হাজার হাঙরকে মারতে হবে। গাছের থেকেও ‘স্কুইলিন অয়েল’ পাওয়া যায়। সংস্থাটির দাবি, হাঙর না-মেরে যদি গাছ থেকে পাওয়া স্কুইলিন অয়েল ব্যবহার করা হয়।

যে গতিতে গবেষণা চলছে, তাতে আগামী বছর একাধিক সংস্থা টিকা আবিষ্কার করে ফেলবে বলে আশাবাদী হু। গত কাল একই আশার কথা শুনিয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন’। কিন্তু গত বছর নয়, এ বছর নভেম্বরের মধ্যেই বাজারে প্রতিষেধক আনতে চায় মার্কিন সরকার। আমেরিকায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে সব চেয়ে বেশি, ২ লক্ষের উপরে। সংক্রমিতের সংখ্যা ৭৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এত মৃত্যুর জন্য সরকারি গাফিলাতিকেই দুষছে দেশবাসীর একাংশ। এ দিকে নভেম্বরের গোড়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। গদি টলমল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তিনি চান, যেন তেন মূল্যে ভোটের আগে ভ্যাকসিন আনতে হবে। এমন গুঞ্জনও শোনা গিয়েছে, সে রকম হলে চিন-রাশিয়ার মতো পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিনই বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি প্রকাশ করেছিল মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো। ট্রায়ালে সব চেয়ে এগিয়ে থাকা মার্কিন সংস্থা ‘মডার্না’-র সিইও আজ জানালেন, ২৫ নভেম্বরের মধ্যে কাজ অনেকটা এগিয়ে যাবে। কিন্তু ভোটের আগে কোনও ভাবেই ট্রায়াল সম্পূর্ণ হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE