আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার পরে বাংলাদেশের ভিতরে এবং বাইরে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে। রবিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঢাকায় নিজ সরকারি বাসভবনে বৈঠকে বসেন ইউনূস। রাতে ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম সাংবাদিক সম্মেলনে ওই বৈঠকের নির্যাস তুলে ধরেন। সেখানেও ইউনূসের ওই বার্তার কথা তুলে ধরেন তাঁর প্রেসসচিব।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিবের বক্তব্য, রবিবারে বৈঠকে ইউনূস জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার পরে সে দেশের ভেতরে ও বাইরে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য এবং গোলামিতে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্যই এ সব করা হচ্ছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন ইউনূস। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, শফিকুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যত দিন আছেন, তত দিন দেশের অনিষ্ট হয় এমন কোনও কাজ তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টা) দিয়ে হবে না বলে তিনি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিশ্চিত করেছেন।”
ইউনূসকে উদ্ধৃত করে তাঁর প্রেসসচিব বলেন, “দেশ বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা সব রকম চেষ্টা করছে। এ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।” শফিকুল আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বিভাজন থেকে উদ্ধার পেতে হবে এবং ঐকমত্য থাকতে হবে। সবাই একসঙ্গে বসাতে তিনি মনে সাহস পেয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না করতে পারলে তিনি অপরাধী অনুভব করবেন।”
আরও পড়ুন:
বস্তুত, বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে বার বার নির্বাচনের দাবি উঠেছে। দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এরই মধ্যে ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব ছাড়তে চান বলেও দাবি করেন বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা নাহিদ ইসলাম। তা নিয়েও আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। এরই মধ্যে শনিবার থেকে দফায় দফায় বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ইউনূস। তবে তাঁর প্রেসসচিব জানিয়েছেন, রবিবারের বৈঠকেও ইউনূস স্পষ্ট করেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই করা হবে।
বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধারাবাহিক ভাবে ইউনূসকে নিশানা করে গিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সমাজমাধ্যমের পাতায় শনিবারও হাসিনার একটি অডিয়োবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেও সংগঠনের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার জন্য ইউনূসকে আক্রমণ করেছেন তিনি। মায়ানমারের পরিস্থিতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে ভাবে সামাল দিচ্ছে, তার জন্যও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন ইউনূস। তাঁর দাবি, ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন। রবিবারও রাতে আওয়ামী লীগের আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলে হাসিনা। সেখানেও ইউনূস প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।