বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নাকি পদত্যাগ করতে চাইছেন! এমন তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউনূস। প্রথমে কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। সন্ধ্যায় ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আরও একটি বৈঠকে বসেন তিনি।
গত শুক্রবার ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতা তথা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সেখান থেকে বেরিয়েই তিনি দাবি করেন, পদত্যাগ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন ইউনূস। নাহিদের বক্তব্য, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আশাহত ‘স্যর’ (ইউনূস)। পদত্যাগ নিয়ে তাঁর ‘ভাবনা’র কথা শোনা যাচ্ছিল। এর পর থেকে বিভিন্ন আলোচনা শুরু হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। শনিবারই অবশ্য বাংলাদেশের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, আপাতত পদত্যাগ করছেন না ইউনূস।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিবৃতি দিয়ে জানায়, সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচারপ্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। এই বিতর্কের মাঝে শনিবার রাতে বাংলাদেশের তিন রাজনৈতিক দল— বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ইউনূস। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় শনিবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। যদিও আওয়ামী লীগের কোনও প্রতিনিধিত্ব সেখানে ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকের পরে সন্ধ্যায় ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন তিনি।
আরও পড়ুন:
এই বৈঠকগুলিকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কৌতূহল দানা বেঁধেছে বাংলাদেশি জনতার মনেও। এরই মধ্যে রবিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করানোর কথা ইউনূসকে জানিয়েছে বিএনপির প্রতিনিধিদল। রবিবার যে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ইউনূস বৈঠক করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে নাগরিক ঐক্যও। ওই দলের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার দাবি, “তিনি (ইউনূস) আলোচনা শুরু করেছেন এই কথা বলে যে আমরা অনেক বড় সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট বলতে উনি ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের এই পরিবর্তনকে একেবারেই স্বীকার করতে চায় না।” যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এমন কোনও বিবৃতি প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি।