বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাস, কনসুলেট, কূটনীতিকদের দফতর এবং তাঁদের বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতি মো সাহাবুদ্দিনের ছবি সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েক জন রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারকে ফোন করে এই নির্দেশ পাঠানো হয় বলে খবর। কিন্তু কেন রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। মুখে কুলুপ প্রশাসনেরও।
সাধারণত এই ধরনের সরকারি নির্দেশিকা লিখিত আকারে দেওয়া হয়েছে থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর বিষয়টিতে তা করা হয়নি। বরং টেলিফোনে অঞ্চলভিত্তিক কয়েক জন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরে ওই কূটনীতিকদের অন্য মিশনগুলিতে খবরটি পৌঁছে দিতে বলা হয়। সূত্রের খবর, দক্ষিণ এশিয়া, এশিয়া প্যাসিফিক, আফ্রিকা, ইউরোপের কয়েকটি দূতাবাস ও হাইকমিশন এখনও রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ পায়নি।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত এক জন প্রথমসারির কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ঢাকা থেকে ফোনে আমাদের জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছবি সরাতে হবে। এই নির্দেশ লিখিত ভাবে আসেনি, তবে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অন্য মিশনগুলোতেও বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার। একই সঙ্গে তদারকির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।’’ আর এক জন কূটনীতিক জানান, তাঁদের অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সরাসরি জানালেও কাছাকাছি আর একটি মিশনের মাধ্যমে বার্তাটি তাঁদের কাছে পৌঁছেছে।
সূত্রের খবর, বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপমিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টির বেশি মিশন ও উপমিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওয়াশিংটন, নয়াদিল্লি, বেজিং-সহ বেশির ভাগ মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সিনিয়র কূটনীতিকদের একাংশের মতে, গত বছরের ৫ অগস্টের পর থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। পরবর্তী সময় মন্ত্রকের উদ্যোগে দূতাবাস, হাই কমিশনের প্রধানদের ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক হত। এক কূটনীতিকের কথায়, ‘‘ওই ভিডিয়ো বৈঠকগুলিতেই দেখা গিয়েছ মন্ত্রক কারও ছবি নেই। অতএব দূতাবাস ও হাই কমিশনগুলির কাছে বার্তা স্পষ্ট ছিল। মিশনগুলিকে আপাতত ‘ছবিমুক্ত’ করতে হবে।’’ অবশ্য ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এ ভাবে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে দেওয়া কি সংবিধানকে লঙ্ঘন করা নয়?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)