বাংলাদেশে চলছে প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স।
চার দফা দাবিতে মঙ্গলবার থেকে আগামী সাত দিন দেশ জুড়ে ‘প্রতিরোধের সপ্তাহ’ পালনের ডাক দিল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। মঙ্গলবার ভোরে মঞ্চের পক্ষ থেকে কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিকেল ৩টেয় ঢাকার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জমায়েতে অংশ নেবেন ছাত্রেরা। শহিদদের স্মরণে প্রার্থনাও করবেন তাঁরা।
আপাতত চার-দফা দাবি রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। শেখ হাসিনা ও তাঁর দল যে রাষ্ট্রীয় হত্যা চালিয়েছে, সে সবের বিচার চেয়ে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণেরও তীব্র নিন্দা করেছেন তাঁরা। দোষীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন ছাত্রেরা। এ ছাড়াও ছাত্রদের দাবি, সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে, এবং প্রশাসন ও বিচার বিভাগের যাঁরা যাঁরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে গণহত্যায় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের অবিলম্বে বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকারের পতনের রাতেই একটি সাংবাদিক বৈঠক করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটানো হল। কেবল ব্যক্তিকে সরালেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং যে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্য দিয়ে এ ধরনের ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়, সেই কাঠামোরও বিলোপ করতে হবে আমাদের।” এর পর বৃহস্পতিবার রাতেই বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। সরকারের প্রধান হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তিনি। বাকি উপদেষ্টাদের মধ্যে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাহিদ, সজীবরাও।
বিভিন্ন সরকারি দফতরগুলির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের হাতে রয়েছে ২৭টি মন্ত্রক। অর্থ মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, শিল্প মন্ত্রক, আইন এবং বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন অন্যেরা। নাহিদের হাতে দু’টি মন্ত্রকের দায়িত্ব— ডাক মন্ত্রক এবং টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। আর সজীব ভুঁইয়াকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে, আপাত জয় এলেও এখনও স্তিমিত হয়নি ছাত্রদের আন্দোলন। নির্বিচারে গণহত্যায় দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং সারা দেশে ‘ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো’র পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy