রাজনৈতিক দল হিসাবে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’-র (জামাত) স্বীকৃতি বাতিল করে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, তা খারিজ করে দিল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। রবিবার শীর্ষ আদালতের আপিল বিভাগ এই রায় দিয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে জামায়াত এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের স্বীকৃতি (নিবন্ধন) বাতিল করে হাই কোর্টের একটি রায় ছিল। রবিবার সেটিই খারিজ করা হল। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই রায় দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
জামায়াত এবং তার ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-যোগের অভিযোগ এনেছিলেন হাসিনা। ২০২৪ সালের ১ অগস্ট এই দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ৫ অগস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে হাসিনা ভারতে চলে আসেন। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার পর জামায়াত এবং ছাত্র শাখার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিল। বলা হয়েছিল, এই দলের সঙ্গে সন্ত্রাস যোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশি গোয়েন্দাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই দু’টি দলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় ইউনূস সরকার।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে যে স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে প্রথম মামলা হয়েছিল ২০০৯ সালে। তার পর জামায়াতের স্বীকৃতি অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্ট ২০১৩ সালে রায় দেয়। নির্বাচন কমিশন জামায়াতের স্বীকৃতি বাতিল করে ২০১৮ সালে। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াত আবেদন জানিয়েছিল। ২০২৩ সালে এক বার আইনজীবীর অভাবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। পরে ২০২৪ সালে আবার নতুন করে আবেদন জানায় জামায়াত। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল। রবিবার সেই মামলাতেই রায় ঘোষিত হল। স্বীকৃতি বাতিলের হাই কোর্টের রায় খারিজ করল আপিল বিভাগ।