Advertisement
E-Paper

বাঁশখালীর ঘটনা অনভিপ্রেত, মানুষকে আগে বোঝানোর দরকার ছিল বাংলাদেশ সরকারের

রাজনীতি ছেলেখেলা নয়, আগুন নিয়ে খেলা। একটু এদিক সেদিক হলে সব পুড়ে ছাই। অর্বাচীনের অনুশোচনা মূল্যহীন। শাক দিয়ে মাছ ঢাকারও কোনও মানে হয় না। তার চেয়ে দোষ কবুল করা ভাল। রাজনৈতিক অপরাধ স্বীকার করাটা ন্যায্য কাজ। লোকে অন্তত বুঝবে, নেতারা ধাপ্পাবাজ নয়। ভুল করে গল্প ফেঁদে পালাতে চায় না।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ১৩:৫৪
ছবি সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।

ছবি সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।

রাজনীতি ছেলেখেলা নয়, আগুন নিয়ে খেলা। একটু এদিক সেদিক হলে সব পুড়ে ছাই। অর্বাচীনের অনুশোচনা মূল্যহীন। শাক দিয়ে মাছ ঢাকারও কোনও মানে হয় না। তার চেয়ে দোষ কবুল করা ভাল। রাজনৈতিক অপরাধ স্বীকার করাটা ন্যায্য কাজ। লোকে অন্তত বুঝবে, নেতারা ধাপ্পাবাজ নয়। ভুল করে গল্প ফেঁদে পালাতে চায় না। সত্যি বলার সাহস আছে। ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামে চূড়ান্ত অপদার্থতার পরিচয় দিয়েছিল তখনকার সরকার। রিমোট কন্ট্রোলে জমি অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। ভেবেছিল, এক লহমায় সব জমি হাতের মুঠোয় চলে আসবে। রাতারাতি কেমিক্যাল হাব গড়ে উঠবে। হয়নি। সব প্ল্যান নয়ছয়। জমি রক্তে ভিজেছে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউপিতে। জমি দখল নিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষ। বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার কথা ছিল। তার পক্ষে বিপক্ষে আর পুলিশের সংঘাতে রণক্ষেত্র। রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা সক্রিয় হলে এমন ঘটনা ঘটত না। তারা যদি মানুষকে বোঝাতেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের তাৎপর্য, যাতে ক্ষতি নেই বরং লাভ। জমিহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগও থাকছে। জমির দালালদের দূরে রাখার দরকার ছিল। জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে জমি নেওয়ার কাজটা সরকার সরাসরি পরিচালনা করলে, অনেক ভাল হত।

শুধু শ্রমিক কৃষক কেন, সব সাধারণ মানুষকে উচ্চশিক্ষিত ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। বার বার বোঝাতে তবে। সব হারানোর ভয়টা কাটাতেও সময় লাগে। কাজটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সদিচ্ছায় নেতা কর্মীরা যদি মানুষের পাশে দাঁড়ায়, আন্তরিকভাবে তাদের সব সংশয় দূর করেন, তাহলে কোনও কথাই নেই। কাঁটা পথও সিল্কের মতো মসৃণ হয়। সব রাজনৈতিক দল মিলে মিশে করলে কাজটা আরও সহজ।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরক্ত। বিদ্যুৎ প্রকল্প রুখে দেওয়ায় তাঁর ক্ষোভ স্বাভাবিক। তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎ প্রকল্প করতে গেলেই পরিবেশ নষ্টের অভিযোগে বাধা আসে। তিনি জানান, ১৯৯৬-তে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় দিনাজপুরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সেখানে দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। তৃতীয়টির কাজ চলছে। এলাকার কোনও ক্ষতি হয়নি, বরং জমির উর্বরতা বেড়েছে। যথেষ্ট ধান-পান হচ্ছে। সবুজ গাছপালা মাথা তুলছে। মানুষ নিশ্চিন্তে বাস করছে। হাসিনার ধারণা, কয়লার উপকারিতা অনেকের জানা নেই। জল পরিশোধনে কয়লা লাগে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পোড়া ছাই, সিমেন্ট কারখানার অন্যতম রসদ।

হাসিনা কথাগুলো আগে বললে মানুষের ভুল ভাঙত। মিথ্যে প্ররোচনায় আন্দোলনমুখীদের নিরস্ত করা যেত। সরকার যতই উন্নয়নের পরিকল্পনা নিক, কাজ করতে হবে মানুষকে নিয়ে। তারা বেঁকে বসলে পায়ে পায়ে ঠোক্কর। অনভিপ্রেত ঘটনায় কাজ পণ্ড, নয়ত বিলম্বিত। মানুষের সঙ্গে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার খেসারত দিতে হয় অনেক। উন্নয়নের খাতিরে মানুষের মন অগ্রাহ্য করা ভুল। এটা রাজনৈতিক ব্যর্থতা। উন্নয়নমুখী সরকারের কাছে সেটা কাম্য নয়।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে পাকিস্তান?

Amit Basu Banskhali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy