মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু ডুবোজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা করার পরেই ইউক্রেনের উপর চাপ বাড়াল রাশিয়ার মিত্র দেশ বেলারুশ। ইউক্রেন সীমান্তের দায়িত্বে নবগঠিত বিশেষ বাহিনী ‘স্পেশ্যাল অপারেশনস ফোর্সেস’ (এসওএফ)-এর হাতে তুলে দিতে চলেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার লুকাশেঙ্কোর সরকার।
ইতিমধ্যেই সীমান্তে একটি ‘রকেট আর্টিলারি ব্রিগেড’ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, একটি বিশেষ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্রিগেড গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেলারুশ সরকার। রুশ সংবাদ সংস্থা ‘তাস’কে শনিবার ব্রিগেডের কমান্ডার মেজর জেনারেল ভাদিম ডেনিসেনকো জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণেই ইউক্রেন সীমান্তে এই কৌশলগত পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা। শীত পড়ার আগে ইউক্রেন সীমান্তে বিশেষ প্রশিক্ষিত এসওএফের উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মতোই বেলারুশও সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের আর এক দেশ। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর পরিচিতি ‘পুতিন-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে। এমনকি, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মস্কো তাদের পরমাণু অস্ত্রভান্ডারের একাংশ বেলারুশে মজুত করেছে। আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে রুশ ফৌজ মোতায়েনেরও অনুমোদন দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভারত এবং রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী বোঝাপড়া করছে, তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। একসঙ্গে তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে ডোবাতে পারে।”
ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পরেই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট তথা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ আমেরিকাকে নিশানা করে বলছিলেন, ‘‘যাদের মৃত বলা হচ্ছে, তাদের ‘ডেড হ্যান্ড’ থেকে আসন্ন বিপদকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না।” এর পরেই ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়া জলসীমার কাছে পরমাণু অস্ত্রবাহী দু’টি ডুবোজাহাজ পাঠানোর করা ঘোষণা করেন। কারণ হিসাবে জানান, মেদভেদেভের মন্তব্য প্ররোচনামূলক। তাই এমন পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, ‘ডেড হ্যান্ড’ এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রত্যাঘাতের পদ্ধতি, যা আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের জমানায় গড়ে তোলা হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যদি আমেরিকা বা অন্য কোনও পরমাণু শক্তিধর প্রতিপক্ষ প্রথম আঘাতে সোভিয়েত নেতৃত্ব এবং কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল ধ্বংস করে দেয়, তবুও স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ‘চূড়ান্ত প্রতিশোধমূলক প্রত্যাঘাত’ করতে পারবে মস্কোর পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র।