Advertisement
E-Paper

ঘুম ভাঙতেই কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি পুলিশের

একটি নয়, পর পর বেশ কয়েকটি গুলি করা হয় বলে ওই যুবকের পরিবারের দাবি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৮
উইলি ম্যাকয়।

উইলি ম্যাকয়।

গাড়ির ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন বছর কুড়ির কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ। ছেলেটিকে গুলি করে মারার অভিযোগ উঠেছে ক্যালিফর্নিয়ার ভ্যালেহো-র ছয় পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। একটি নয়, পর পর বেশ কয়েকটি গুলি করা হয় বলে ওই যুবকের পরিবারের দাবি।

পুলিশ জানিয়েছে, একটি খাবারের দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল গাড়িটা। গত শনিবার রাতে গাড়িতে বসে ঘুমোচ্ছিলেন ওই যুবক। তাঁর কাছে হ্যান্ডগান ছিল। যা দেখে সংশ্লিষ্ট অফিসারেরা বিপদের আঁচ পান। তাই তাঁকে গুলি করা হয়। যুবকের পরিবার জানিয়েছে, তাঁর নাম উইলি ম্যাকয়। পেশায় তিনি র‌্যাপার। উইলিকে সবাই চিনত র‌্যাপার উইলি বো নামে। পরিবারের দাবি, এটা একেবারেই বর্ণবিদ্বেষী ঘটনা। তা ছাড়া এর আর কোনও ব্যাখ্যা হয় না। এক জন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক বসে আছেন দেখেই তাঁকে মারতে গোটা পুলিশ বাহিনী সক্রিয় হয়ে ওঠে। গাড়িতে ঘুমোচ্ছেন এক যুবক, তাঁর থেকে কী বিপদ টের পেলেন ওঁরা?’’

উইলির প্রবীণ ভাই মার্ক সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ কোনও সমাধান বার করার জন্য এক বার চেষ্টাও করা হয়নি। যারা আইন ভাঙছে, তাদের গ্রেফতার করা পুলিশের কাজ। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া তাদের কাজের মধ্যে পড়ে না। ওরা তো বিচারক নয়।’’

আরও পড়ুন: লটারি পাওয়ার খবর লুকোতে মুখোশ পরে এলেন এই ব্যক্তি

পুলিশের অবশ্য দাবি, যে খাবারের দোকানের বাইরে যুবকের গাড়ি দাঁড়িয়েছিল, সেই দোকানের এক কর্মীই ফোন করেছিলেন ৯১১-য়। তিনি বলেন, একটি লোক গাড়িতে ঝুঁকে বসে আছে। তখন রাত সাড়ে দশটা। পুলিশ আরও জানিয়েছে, যুবককে ডাকাডাকি করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তাঁর কোলের উপরে হ্যান্ডগানটি রাখা ছিল। গাড়ির দরজা বন্ধ, কিন্তু ইঞ্জিন চালু ছিল। পুলিশ এই সময় বাহিনী ডেকে পাঠায়। তখনই নড়ে উঠতে দেখা যায় যুবককে।

আরও পড়ুন: ‘অপরচুনিটি’ শেষ, ঘোষণা নাসার

পুলিশের দাবি অনুযায়ী, ঘুম ভাঙার পরে ওই যুবককে বলা হয়েছিল তাঁর হাত দু’টো যাতে স্পষ্ট দেখা যায়, সে ভাবে বসে থাকতে। কিন্তু যুবক তাদের কথা না শুনে দ্রুত হাত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র আড়াল করার চেষ্টা করেন। তখনই চার সেকেন্ডের মধ্যে গুলি চালান ছয় অফিসার। কিন্তু মোট ক’টা গুলি যুবকের গায়ে লেগেছিল, তা জানায়নি পুলিশ। গুলি চালানোর পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে দাবি পুলিশের। তখনই দেখা যায়, তাঁর দেহে আর প্রাণ নেই। পুলিশ অবশ্য তাঁর পরিচয় এখনও নিশ্চিত করে জানায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টও এখনও আসেনি।

ভ্যালেহো-তে এর আগেও কৃষ্ণাঙ্গদের উপরে পুলিশের চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সান ফ্রান্সিসকো থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরের এই শহরে নানা বর্ণের মানুষের বাস। ২০১৭ সালের একটি ভিডিয়োতে ভ্যালেহোরই এক অফিসারকে দেখা গিয়েছিল, পা দিয়ে একটি লোককে পিষে মারতে, একই সঙ্গে হাত দিয়ে লোকটির মুখে ঘুষি চালাচ্ছিলেন তিনি। গত মাসেও নৌবাহিনীর এক প্রবীণ কর্মী ভ্যালেহোর অফিসারের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ জানিয়েছেন।

ওই কর্মীর ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই ঘটনার ভিডিয়ো করছিলেন বলে পুলিশ অফিসার চড়াও হন তাঁর উপরে।

উইলির আর এক ভাইও বলছেন, ‘‘ভ্যালেহোর পুলিশকে কেউ বিশ্বাস করে না। ইচ্ছে করে আমাদের মারা হচ্ছে। কৃষ্ণাঙ্গ যুবকদের মেরে ফেলার জন্য পুলিশের মাথায় একটা ছক আছে। যাতে উইলিও পড়ে। হিপহপ গানের লোক। ওঁদের সব সময়ে নজরে রাখা হয়।’’ মার্কের দাবি, ‘‘পুলিশকে শেখানো হয়, কিছু জানার আগেই কী ভাবে গুলি চালিয়ে আহত করতে হবে। ওঁরা কৃষ্ণাঙ্গদের শ্রদ্ধা করে না। একেবারে সাধারণ ব্যক্তি, যে আশঙ্কার কারণ হতেই পারে না, তাকেও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে ছাড়ে না। এটা আমেরিকাতেই হয়।’’

উইলি শৈশবেই বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন। সঙ্গীত ভালবাসতেন খুবই। ভ্যালেহোয় তাঁর মতো অনেকেই র‌্যাপার। উইলির মতো ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগিয়ে গুলি করে মারার ঘটনা আগেও ঘটেছে সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া-তে। ওকল্যান্ডে গত বছর ঘুমিয়ে থাকা এক গৃহহীন ব্যক্তিকে এ ভাবেই মারা হয়। ওই ব্যক্তির কাছে অস্ত্র ছিল বলে অভিযোগ পুলিশের।

Racism United States
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy