ঢাকার গুলশনে জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড আর বর্ধমানের দু’টি জঙ্গি ডেরা থেকে উদ্ধার হওয়া গ্রেনেড একই ধরনের। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই, শুক্রবার বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ জঙ্গি দমন বিভাগ গুলশন হামলার সঙ্গে খাগড়াগড় মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ফেরার সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লার সরাসরি যোগ থাকার দাবি করেছে।
ঢাকায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম এ দিন জানিয়েছেন, ‘‘সোহেল মেহফুজই গুলশন হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডগুলি তৈরি ও সরবরাহ করে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ সোহেল এর আগে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর এক জন মাথা ছিল। সে এখন নয়া জেএমবি-র হয়ে
কাজ করছে।’’ খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) হদিশ পায়— বাংলাদেশে ধরপাকড়ে কোণঠাসা জেএমবি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও অসমেও তাদের সংগঠন গড়েছে। এবং সে কাজে যে ক’জন প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল, সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লা তাদের অন্যতম।
সম্প্রতি বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের তিন সদস্যের একটি দল কলকাতায় এসেছিল। এনআইএ-র হেফাজতে থাকা সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি মুসার সঙ্গে তারা কথা বলেন। এনআইএ-র একটি সূত্রের খবর, গুলশনে যে সব গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জঙ্গিরা হামলা চালায়, তার ছবি বাংলাদেশ পুলিশ নিয়ে এসেছিল। এনআইএ-র অফিসাররা সেই ছবি দেখে জানান, বর্ধমানে জেএমবি-র দু’টি ডেরা থেকে দু’বছর আগে এই ধরনের গ্রেনেডই মিলেছিল। ২০১৪-র অক্টোবরে খাগড়াগড়়ে বিস্ফোরণ হওয়ার পর জেএমবি-র ওই ডেরা এবং কয়েক দিন পর ঘটনাস্থলের অদূরে বাবুরবাগের আর একটি ডেরা থেকে প্রচুর গ্রেনেড পাওয়া যায়।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, নাসিরুল্লা জেএমবি-র রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের শীর্ষে ছিল। এক সময়ে সে নিজেই ওই সব বোমা বানাত। বছর কয়েক আগে বোমা বিস্ফোরণে তার একটা হাত কব্জির নীচে থেকে উড়ে যায়। তার পর থেকেই সে হাতকাটা নাসিরুল্লা নামে পরিচিত। ওই ঘটনার পর থেকে সোহেল নিজে বোমা না-বানালেও অন্য জঙ্গিরা তার সূত্র ও পদ্ধতি মেনে ওই মারণাস্ত্র তৈরি করে।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, নাসিরুল্লাই ঠিক করে, কোন হামলার জন্য কোথায় কত বোমা সরবরাহ হবে। এনআইএ-র এক অফিসার এ দিন বলেন, ‘‘গুলশন ও খাগড়াগড়ের বোমা একই রকম বলে আমরা জানানোর পর সম্ভবত সেই সূত্র ধরেই বাংলাদেশ পুলিশ তদন্তে এগিয়েছে। তার পরই তারা সোহেল ওরফে নাসিরুল্লার নাম জেনেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy