Advertisement
E-Paper

শুরু হল ব্রেক্সিট পর্ব, চিঠিতে সই টেরেসার

ছ’পাতার একটা চিঠি। হাতে-হাতেই আজ লন্ডন থেকে পৌঁছে গেল ব্রাসেলসের ঠিকানায়। প্রাপক এক নিঃশ্বাসে পড়া শুরু করলেন। থামলেন গিয়ে একেবারে শেষের পাতায়।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০২:৫৬
 বিক্ষোভ: বুধবার ইইউ-এর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ পর্বের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সে দিনেই লন্ডনের রাস্তায় প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স

বিক্ষোভ: বুধবার ইইউ-এর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ পর্বের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সে দিনেই লন্ডনের রাস্তায় প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স

ছ’পাতার একটা চিঠি। হাতে-হাতেই আজ লন্ডন থেকে পৌঁছে গেল ব্রাসেলসের ঠিকানায়। প্রাপক এক নিঃশ্বাসে পড়া শুরু করলেন। থামলেন গিয়ে একেবারে শেষের পাতায়। ঠিক যেখানটায় সই করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। মাঝে ছোট্ট একটা বিরতি। তার পর মুখ খুললেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। প্রথমে বললেন, ‘‘অভাবটা এখন থেকেই টের পাচ্ছি।’’ আর ইতি টানলেন ‘থ্যাঙ্ক ইউ’, ‘গুড বাই’ বলে।

ইতি টানাই বটে! ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ৪৩ বছরের সম্পর্ক শেষ করতে চেয়ে আজ বিচ্ছেদ চিঠিতে সই করলেন টেরেসা মে। অর্থাৎ লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর ধারা মেনে আজ থেকেই শুরু হয়ে গেল ব্রেক্সিট। গত জুনে এই বিচ্ছেদ চেয়েই গণভোটে সাড়া দিয়েছিল রানির দেশ। টেরেসা তাই আজ চিঠিতে সইয়ের পর-পরই হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত এটা। আর পিছিয়ে আসার প্রশ্নই উঠছে না। ব্রিটেনকে আরও পোক্ত, আরও সুন্দর করে তোলার সুযোগ এসেছে এখন।’’

এখন মানে অবশ্য এখনই নয়। বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শেষ হতে অপেক্ষা অন্তত দু’বছরের। তবে ইইউ-এর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২২-এর আগে কিছুতেই জোট ছেড়ে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারবে না ব্রিটেন। কারণ এত অল্প সময়ের মধ্যে এত দিনের সব দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে না রানির দেশ। ব্রিটেনকে কোনও বাড়তি ছাড় দিতেও রাজি নয় ইইউ৷ প্রকাশ্যে অবশ্য তিক্ততা চাইছে না কাউন্সিল। কারণ ব্রিটেন বাজার ছাড়লে ভোগান্তি রয়েছে বাকি ২৭টি সদস্য দেশের।

সিঁটিয়ে রয়েছে ব্রিটেনেরও একটা বড় অংশ। তাদের আশঙ্কা, সত্যিই যদি দু’বছর পরে ব্রিটেন বেরিয়ে যায়, ইইউ কিন্তু আর এত সহজে আর নয়া চুক্তি করবে না। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা চালাতে হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠন ডব্লিউটিও-র নিয়ম মেনেই। আর তাতে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে দু’পক্ষেরই।

যদিও ব্রেক্সিটে ব্রিটেনের ক্ষতির কথা মানতে নারাজ ব্রেক্সিটপন্থী প্রাক্তন ইউকিপ নেতা নাইজেল ফারাজ। গত কালই তিনি এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘এত দিন টাইটানিকে খাবি খাচ্ছিলাম। ব্রেক্সিটই আমাদের লাইফ-বোট জুগিয়েছে।’’ তাই ব্রেক্সিট বিফলে গেলে তিনি নিজেই ব্রিটেন ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

জটিলতা তবু থাকছেই। ব্রেক্সিট গণভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ব্রিটেন ছাড়তে চাইছে স্কটল্যান্ড। মঙ্গলবার এ নিয়ে গণভোটের পক্ষে সায় দিয়েছে স্কটিশ পার্লামেন্ট। তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া এগোতে পারবে না তারা। তাই স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন নরম সুরেই বলছেন,

‘‘আমরা আশা রাখি, স্কট পার্লামেন্টের এই ইচ্ছাকে যথাযোগ্য সম্মান জানাবে ব্রিটিশ সরকার।’’

বিচ্ছেদের চিঠিতে সুর নরম রেখেছেন টেরেসাও। ইউরোপীয় কাউন্সিলকে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা ইইউ ছাড়ছি, ইউরোপ নয়।’’

Brexit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy