মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করতে গিয়ে এ বার ভারত-পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্কি কার্নে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রের ট্রাম্পের দাবিকেই সমর্থন করলেন তিনি। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ‘শান্তি’ ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, ট্রাম্পের প্রশংসা করতে গিয়ে কার্নে বলেছেন, ‘‘উনি এমন একজন প্রেসিডেন্ট, যিনি বিশ্বে পরিবর্তন এনেছেন!’’
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন কার্নে। তার পর দু’দেশের সম্পর্ক এবং বিশ্ব শান্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ট্রাম্প নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তার পর বিশ্বশান্তির কথা বলতে গিয়ে কার্নে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের প্রসঙ্গ তোলেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তান, আর্মেনিয়া এবং আজ়ারবাইজানে শান্তিপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা— সব কিছুই আপনার নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে।’’
কানাডার সঙ্গে আমেরিকার দ্বন্দ্ব এখন অনেকটাই প্রশমিত। দু’দেশের দ্বন্দ্বের মূলে ফেন্টানাইল সমস্যা। আদতে ফেন্টানাইল ব্যথা উপশমকারী ওষুধ। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, আমেরিকায় ওষুধটি মাদক হিসাবে ব্যবহার হয়। এই মাদকটি ব্যথার উপশমের ক্ষেত্রে মরফিনের তুলনায় বহু গুণ শক্তিশালী। এর আগেও ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, কানাডা হয়ে এই মাদক আমেরিকায় প্রবেশ করছে। দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ফেন্টানাইল সমস্যা নিয়ে কানাডার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে ট্রাম্পের। গত ফেব্রুয়ারিতেই ট্রাম্প জানান, কানাডার পণ্যে আমেরিকা ২৫ শতাংশ শুল্ক বসাবে। আমেরিকার পণ্যের উপর পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে কানাডার তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। তবে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর বিষয়টি স্থগিত ছিল। পরে আবার ট্রাম্প নতুন করে কানাডার উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন:
সেই আবহে দু’দেশের প্রধান হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন। ওই বৈঠকে শান্তিপ্রতিষ্ঠার ‘দূত’ হিসাবে ট্রাম্পকে তুলে ধরে কী বার্তা দিতে চাইলেন কার্নে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু কূটনৈতিক মহলে। খলিস্তান বিষয়ে ট্রুডো জমানায় ভারত-কানাডার মধ্যে সম্পর্কে যে টানাপড়েন চলছিল, তা এখন অনেকটাই কেটেছে। দুই দেশ বরাবরই সম্পর্ক উন্নতির কথা বলে। সে ক্ষেত্রে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের দাবি সমর্থন করে কি ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ালেন কার্নে? উঠছে প্রশ্ন।
গত মে মাসে চার দিন ব্যাপী সামরিক উত্তেজনার পর এখন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি বজায় রয়েছে। তবে এই সংঘর্ষবিরতি নিয়ে প্রথম থেকেই কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। তাঁর কথাতেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি ফিরেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই দাবি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। যদিও ভারত বরাবরই ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ করেছে। তবে বেশ কয়েক জন রাষ্ট্রপ্রধান ট্রাম্পের দাবির সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। সেই তালিকায় যুক্ত হলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।