Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
Imran Khan

পাক পরিস্থিতি: সতর্ক নজর দিল্লির

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নাশকতা বাড়তে পারে বলে অনুমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের।

ইমরান খান।

ইমরান খান। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ০৯:০৬
Share: Save:

আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জামিনের আবেদন ইসলামাবাদ হাই কোর্ট মঞ্জুর করেছে ঠিকই। কিন্তু পাকিস্তানের রাজনৈতিক এবং আইনশৃঙ্খলার সঙ্কট দীর্ঘমেয়াদি বলেই আশঙ্কা করছে সাউথ ব্লক। এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা এবং পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত জুড়ে সতর্কতা বাড়ানোর নির্দেশ ছাড়া কূটনৈতিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। কূটনৈতিক মহলের মতে, দেশবাসীর জনপ্রিয়তা হারানো একটি সরকার যা আর্থিক ভাবে প্রায় সর্বস্বান্ত, সেখানে বিক্ষোভ এবং হিংসার গতি এর পরে কোন দিকে যাবে তা আগে থেকে আঁচ করা সম্ভব নয়। তাই সতর্ক ভাবে পরিস্থিতিতে নজর রাখছে ভারত।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নাশকতা বাড়তে পারে বলে অনুমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার মতো কোনও উপায় ভারতের নেই। সেই চেষ্টাও করা হবে না। কিন্তু পাশাপাশি, বিদেশ মন্ত্রকের একাংশ ঘরোয়া ভাবে এটাও জানাচ্ছে যে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে, পাক সরকার অপেক্ষাকৃত নরম হতে পারে। যে হেতু ক্রমশ দ্রুত ‘বন্ধু’ হারাচ্ছে ইসলামাবাদ, তাই দরকষাকষির একটা চেষ্টা তাদের দিক থেকেও দেখা যেতে পারে। আর সেই বাধ্যবাধকতার কারণে নয়াদিল্লির সঙ্গে তারা সম্পর্ক শুধরোনোর চেষ্টা (অন্তত উপর থেকে) করতে পারে। সে ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে সাউথ ব্লককে।

কেন ভারত মনে করছে ইসলামাবাদ ক্রমশ নির্বান্ধব হচ্ছে? কূটনৈতিক সূত্রের মতে, অতীতে এই ধরনের বিপাকে পাকিস্তান বারবার পাশে পেয়েছে চিন এবং আমেরিকাকে। কিন্তু বিভিন্ন ভূকৌশলগত কারণে (পাকিস্তানের তালিবান নির্ভরতা যার মধ্যে অন্যতম) আমেরিকা এই মুহূর্তে পাকিস্তানকে ‘পরম বন্ধু’ ভাবতে আগ্রহী নয়। পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক গাড্ডা থেকে টেনে তুলতে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-কেও কোনও সবুজ সঙ্কেত এখনও দেয়নি ওয়াশিংটন। অন্য দিকে, চিনও আর পাকিস্তানের ফুটো পাত্রে অবিরত জল ঢেলে যেতে রাজি নয়, এমন ইঙ্গিতই মিলেছে। সব চেয়ে বড় কথা, পশ্চিম এশিয়া (বিশেষ করে সৌদি আরব) আগের মতো দরাজহস্ত নয়।

তবে ভারত এ কথাও খেয়াল রাখছে যে, পাকিস্তানের অর্থনীতি ও প্রশাসন একেবারে ভেঙে পড়ুক, তা উপরোক্ত কোনও রাষ্ট্রেরই কাঙ্খিত নয়। কারণ ইসলামাবাদের অবস্থান কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং পাকিস্তান একটি পরমাণু শক্তিধর দেশও বটে। ফলে পরিস্থিতির গতির দিকে সতর্ক নজর রাখা এবং অবস্থা বুঝে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে পাক বিষয়ক দৌত্যকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে ভারতের তরফ থেকে। ভারতেও লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। মোদী সরকার কী ভাবে পাক সরকারের সঙ্গে ব্যবহার করে সেটাও অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে এসসিও-র বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো গোয়া আসার পর বাগ্‌যুদ্ধ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ন্যূনতম কূটনৈতিক সৌজন্যের পরোয়াও ভারত বা পাকিস্তান— কোনও দেশের বিদেশমন্ত্রীই করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE