Advertisement
E-Paper

গত দুই দশকে বাংলাদেশে ১১টি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের সাতটিই চিনের তৈরি! বিপদ বাড়াচ্ছে ঢাকার অপরিকল্পিত নগরায়নও

বাংলাদেশ সেনার পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে সে দেশের ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ সংবাদপত্র জানিয়েছে, গত দুই দশকে (২০ বছরে) বাংলাদেশে বায়ুসেনার ১১টি বিমান ভেঙে পড়েছে। ঘটনাচক্রে, তার মধ্যে সাতটি বিমানই চিনের কোনও না কোনও সংস্থার তৈরি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫ ১১:১১
বাংলাদেশের ঢাকায় স্কুলভবনে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার পর চলছে উদ্ধারকাজ।

বাংলাদেশের ঢাকায় স্কুলভবনে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার পর চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশের ঢাকায় স্কুলভবনে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর আন্তর্বিভাগ জনসংযোগ শাখা (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানটি ওড়ার পর পরই তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি লক্ষ করেন পাইলট। তিনি চেয়েছিলেন বিমানটিকে কোনও ফাঁকা এলাকায় অবতরণ করাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পারেননি। স্কুলের একটি ভবনের উপর ভেঙে পড়ে সেটি। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা, এখনও অবধি সবিস্তার তা জানা যায়নি। যা জানা গিয়েছে, তা হল দুর্ঘটনাগ্রস্ত এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি চিনের একটি সংস্থা তৈরি করে। সংস্থার নাম চেংদু এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন।

বাংলাদেশ সেনার পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে সে দেশের ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ সংবাদপত্র জানিয়েছে, গত দুই দশকে (২০ বছরে) বাংলাদেশে বায়ুসেনার ১১টি বিমান ভেঙে পড়েছে। ঘটনাচক্রে, তার মধ্যে সাতটি বিমানই চিনের কোনও না কোনও সংস্থার তৈরি। বাকি তিনটি রাশিয়ার তৈরি এবং একটি চেক প্রজাতন্ত্রের তৈরি। বাংলাদেশ বায়ুসেনার এক প্রাক্তন আধিকারিক ‘ঢাকা ট্রিবিউন’-কে বলেছেন, “বার বার বিমান ভেঙে পড়ার নেপথ্যে রয়েছে চিনের তৈরি বিমান। তার পরেও নানা বাধ্যবাধকতার জন্য বাংলাদেশের বায়ুসেনা এগুলি ব্যবহার করছে।” প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মূলত চিনের তৈরি এফটি-৭, পিটি-৬ এবং এফ-৭এমবি বিমান ব্যবহার করে থাকে।

বাংলাদেশের সামরিক বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে ‘ঢাকা ট্রিবিউন’-এর একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঢাকার অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণেও এই ধরনের বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ছে। সোমবার ঢাকার ঘন জনবসতিপূর্ণ উত্তরা এলাকায় ‘মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ’-এর একটি ভবনের উপর ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার বিমানটি। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের এক প্রাক্তন বায়ুসেনা আধিকারিক বলেছেন, “পাইলট বিমানটি নিয়ে অবতরণ করার চেষ্টা করছিলেন। বিমানটি যেখানে ভেঙে পড়ে সেখান থেকে পাইলটের লক্ষ্মণরেখা বা মার্কার লাইনের কাছেই। ওই এলাকাটা ফাঁকা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু সেখানে একটি খালের উপর নগরায়ন হয়েছে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “দুর্ঘটনা যেখানেই ঘটে থাকুক, নির্বিঘ্নে বিমান অবতরণ করানোর জন্য অন্তত ৮ নটিক্যাল মাইল বাধাবিহীন ‘ফ্রি ফ্লাই জ়োন’ প্রয়োজন।”

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর সোমবার দুপুরে (স্থানীয় সময়) আচমকাই ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার একটি বিমান। ওড়ার ১২ মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। রাত গড়িয়ে যাওয়ার পরেও উদ্ধারকাজ চলে ওই স্কুলে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আর কেউ আটকে আছেন কি না, তারই খোঁজ চলে। সামরিক সরঞ্জাম-সংক্রান্ত মার্কিন ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল সিকিউরিটি ডট কম’-এর তথ্য অনুযায়ী, এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি চিনের একটি সংস্থা তৈরি করে। এই বিমানটি দুই আসন বিশিষ্ট এবং একক ইঞ্জিন যুক্ত। সাধারণত প্রশিক্ষণের কাজে বিমানটি ব্যবহার করে সেনাবাহিনী। সোমবার মহড়ার সময় ভেঙে পড়ে সেটি।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী, চিকিৎসক মহম্মদ সায়েদুর রহমান একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জানান, বিমান দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। অধিকাংশেরই বয়স ১২-র কম। মৃতদের মধ্যে বাকি দু’জন হলেন বিমানটির পাইলট এবং ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা। ওই সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ২০ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসীন রয়েছেন ৭৮ জন। সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা অন্তত ১৭০।

Bangladesh Bangladesh Army Plane Crash China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy