E-Paper

এ বারের ভোটে সেই উত্তেজনা কোথায়

এ বারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর স্ত্রী উষা ভান্স, দু’জনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

শুভশ্রী নন্দী

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২২
কমলা হ্যারিস (বাঁ দিকে), ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

কমলা হ্যারিস (বাঁ দিকে), ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আর দশ দিন পরেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কিন্তু ভোট নিয়ে সে রকম ভাবে উত্তেজনা এ বার চোখে পড়ছে না। তবে ‘আর্লি ভোট’ দেওয়ার কেন্দ্রগুলিতে রোজই সুদীর্ঘ লাইন। ইতিমধ্যেই ১২ লক্ষ ভোট নাকি ব্যালট বাক্সে জমা পড়ে গিয়েছে। ১০০ বছর বয়সি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারও ইতিমধ্যে ভোট দিয়েছেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নানা জনমত সমীক্ষা প্রকাশিত হচ্ছে। সেগুলির একটির সঙ্গে যেমন আর একটির বিস্তর ফারাক, তেমনই আবার বিভিন্ন সমীক্ষার সঙ্গে সহমত হচ্ছেন না অনেকেই। তবে একটা বিষয়ে বেশির ভাগ জনমত সমীক্ষা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরাই একমত— নির্বাচনের ফলাফল ঠিক করে দেবে দু’টি সুইং স্টেট (অর্থাৎ যে প্রদেশগুলি রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট, যে কোনও দিকেই ঝুঁকতে পারে)— পেনসিলভ্যানিয়া এবং আমি যে প্রদেশের বাসিন্দা, সেই জর্জিয়া।

এ বারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর স্ত্রী উষা ভান্স, দু’জনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তবে তাঁদের এই ‘ভারতীয় পরিচিতি’ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটারদের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পাবে বলে অনেকেই ‌মনে করেন না।

আমেরিকায় বর্তমানে ৫০ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বাস। এঁদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ অভিবাসী এবং ৩৪ শতাংশের জন্ম এ দেশেই। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে ২০ শতাংশ নথিভুক্ত রিপাবলিকান ভোটার হলেও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা সাধারণত ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদেরই ভোট দেন। দ্বিতীয় প্রজন্মের ভারতীয়, ক্যালিফোর্নিয়া-নিবাসী আইনের ছাত্র
সায়ক চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা ওল্ড রেসিস্ট গ্র্যান্ডপার ‘গো ব্যাক টু ইয়োর কান্ট্রি’ মূল্যবোধ পেরিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছি। আমরা সকলেই কোনও না কোনও সময় ফাস্টফুডের দোকানে বা কাফেতে এই মন্তব্যের সম্মুখীন হয়েছি। আমরা অনেক ভারতীয় সন্তানেরাই এখানে জন্মে ‘বার্থরাইট সিটিজ়েনশিপ’-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেয়েছি এবং তা নতুন কোনও নীতির ফলে হারাতে চাই না। এই সময়ে বসে আমরা ঘৃণার রাজনীতি কোনও ভাবেই সমর্থন করি না। দেশনেতা শুধু শ্বেতাঙ্গ, ধনী এবং চরমপন্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন সেটা সমর্থনযোগ্য নয়। আমেরিকা চিরকালই পরিশ্রমী (কায়িক ও মেধাভিত্তিক) মানুষের দেশ হিসেবে পরিচিত এবং আমরা সব সময়ে এই দেশটিকে খেটে খাওয়া মানুষের দেশ হিসেবেই দেখতে চাই।”

পেনসিলভ্যানিয়ার বাসিন্দা শতরূপা পোদ্দার মনে করেন, “ভারতীয়েরা, অন্য জাতির মানুষজনের মতোই, ট্রাম্পের পক্ষে ও বিপক্ষে, এই দু’দলে বিভাজিত। ট্রাম্পের রাজনৈতিক দর্শন উচ্চবিত্তদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী এবং প্রযুক্তিবিদ অভিবাসীদের পরিপন্থী। ভারতীয় ভোটারেরা এই দুই ভাগের মধ্যেই পড়েন। এঁদের সমর্থন নির্ভর করবে কারা কোথায় কোন নীতিতে উপকৃত হচ্ছেন, মূলত তার উপরেই।’’

পেনসিলভ্যানিয়া থেকে লোপা বন্দ্যোপাধ্য্যায় একটি জরুরি প্রসঙ্গ তুলে ধরে বললেন, ‘‘অতীতে নির্বাচনী বিতর্ক সভ্যতার মোড়কে বিভিন্ন নীতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন তা অনেকাংশেই মিথ্যাচারণ, অসংলগ্নতা, রুক্ষ চিৎকার ও অপরিণতমনস্কতার প্রতিফলন। লাল (রিপাবলিকান) ও নীল (ডেমোক্র্যাট), দুই দলেরই মানুষের করের টাকা সামাজিক সুরক্ষা, কড়া বন্দুক আইন প্রণয়ন, শিশুসুরক্ষা, স্বাস্থ্যবিমা এবং সীমান্তসুরক্ষায় ব্যয় করা উচিত। কিন্তু তা হচ্ছে কই!’’

সব মিলিয়ে এ বারের ভোটে সেই চিরাচরিত উত্তেজনার আঁচ মিলছে কই!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

america Kamala Harris Donald Trump

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy