করোনা-পরীক্ষা করানোর লম্বা লাইন। শুক্রবার চিনের উহানে। এএফপি
দিন দশেক আগেই এক বার পরীক্ষা হয়েছে। গত কাল আরও এক বার করোনা পরীক্ষা করিয়ে গেলেন উহানের বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। এ বার ঝিরিঝিরি বৃষ্টি মাথায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে। গত ররিবার থেকে চিনের এই শহরে গুচ্ছ সংক্রমণের খবর মেলার পরেই এলাকার সবার অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ নাগরিকের করোনা-পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শহরের বেশ কয়েকটি পার্কিং লট, পার্কে তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী করোনা-পরীক্ষা শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। পারস্পরিক দূরত্ববিধি মেনেই লাইন পড়ছে তাঁবুর বাইরে। শিবির থেকে বেরিয়েই ওই ব্যক্তি বললেন, ‘‘সতর্ক থাকতে অসুবিধা কী! সুযোগ পেয়েছি যখন, পরীক্ষাটা করিয়েই নিলাম।’’
লাইনে দাঁড়ানো সবার মনের অবস্থা কিন্তু এতটাও ‘পজ়িটিভ’ নয়! দ্বিতীয় দফার করোনা-ঝড়ের তাণ্ডব আঁচ করে উহানবাসীর অধিকাংশের চোখেমুখেই দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। যে-ভাবে এত মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তাতে শিবির থেকেই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। করোনার প্রকোপে এই শহরে প্রথম দফায় প্রাণ গিয়েছে প্রায় চার হাজার জনের। ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রায় তিন মাস লকডাউন ছিল উহানে। এপ্রিলের গোড়ায় সবে শহর ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল। তার পরেই নতুন করে ১৫ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এর মধ্যে ১১ জনেরই কোনও কোভিড-উপসর্গ ছিল না বলে দাবি প্রশাসনের। বেজিংয়ের আরও দাবি, এখনও পর্যন্ত দেশের প্রায় ৮৩ হাজার আক্রান্তের মধ্যে ৭৮,২০০ জন করোনা-মুক্ত হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। শুক্রবারের হিসেব, এখন হাসপাতালে আছেন আর মাত্র ৯১ জন।
অস্বস্তি বেড়েই চলেছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপের একটা বড় অংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় ফের আক্রান্ত সাড়ে ১০ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ৮৭ হাজার। সবচেয়ে খারাপ হাল নিউ ইয়র্ক প্রদেশের। তবু প্রদেশের মধ্যে যে সব এলাকায় সংক্রমণের হার তুলনায়, কম সেখানে আজ থেকে ধীরে ধীরে অর্থনীতি সচল করার নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো।
সংক্রমণ কিছুটা কমেছে দাবি করে অর্থনীতি সচল করার পথে হাঁটছে ইউরোপেরও একটা বড় অংশ। সীমান্ত পারে অবাধ যাতায়াত ১৫ জুন পর্যন্ত বহাল রাখলেও আজ থেকেই ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সুইৎজ়ারল্যান্ডের মতো কিছু দেশ থেকে নাগরিকদের বিশেষ প্রয়োজনে জার্মানিতে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে বার্লিন। সূত্রের খবর, তারা ১৪ দিনের কোয়রান্টিন নিয়মও তুলে দিতে চলেছে। নিজেদের করোনা-মুক্ত ঘোষণা করে স্লোভেনিয়াও অস্ট্রিয়া, ইটালি, হাঙ্গেরির সঙ্গে সীমাম্ত উন্মুক্ত করছে। কিন্তু লকডাউন সামান্য শিথিল হতেও দেশে-দেশে যে-ভাবে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে, তাতে ইউরোপের একটা বড় অংশ জুড়েই আশঙ্কার মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy