Advertisement
E-Paper

২০১৯ শেষেই কি করোনা ছিল আমেরিকায়

এত দিন পর্যন্ত জানা ছিল, মূলত নিউ ইয়র্ক ও সিয়্যাটল ভাইরাসের হটস্পটের কাজ করেছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২১ ০৬:০৫
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম যখন করোনা-সংক্রমণ ধরা পড়েছিল চিনের উহানে, আমেরিকাতেও তখন ভাইরাসটি ছিল। মঙ্গলবার একটি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা সংক্রান্ত গবেষণার রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হল।

কালই আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে। খাতায় কলমে এ দেশে প্রথম কোভিড ধরা পড়েছিল ২০২০-র ২১ জানুয়ারি। ‘দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ’-র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তার বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে, ২০১৯-এর ডিসেম্বরেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল আমেরিকায়। বিজ্ঞানীরা ২০২০-র ২ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত সংগৃহীত ২৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা করেন। সেরোলজি টেস্টে ন’জনের রক্তের নমুনায় করোনাভাইরাস থেকে তৈরি অ্যান্টিবডি মিলেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ক্লিনিক্যাল ইনফেকশাস ডিজ়িজ়েস’ জার্নালে।

এত দিন পর্যন্ত জানা ছিল, মূলত নিউ ইয়র্ক ও সিয়্যাটল ভাইরাসের হটস্পটের কাজ করেছে। কিন্তু নয়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পজ়িটিভ নমুনাগুলি এই জায়গার নয়। কোভিডের অ্যান্টিবডি-সহ প্রথম যে নমুনাগুলি পেয়েছেন গবেষকেরা, তাঁরা ইলিনয় এবং ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা। তাঁদের রক্তের নুমনা সংগ্রহ করা হয়েছিল যথাক্রমে ২০২০-র ৭ ও ৮ জানুয়ারি। তাতে এটা স্পষ্ট, ২০১৯-এর ডিসেম্বরেও ভাইরাসটি ছিল। কারণ অ্যান্টিবডি তৈরি হতে অন্তত ২ সপ্তাহ লাগে।

‘জন্স হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেল্‌থ’-এর এপিডিমিয়োলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং গবেষক দলের প্রধান কেরি অ্যালথফ বলেন, ‘‘সংগৃহীত রক্তের নমুনার অ্যান্টিবডি টেস্ট করতেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে আমেরিকায় গোড়ায় কখন ভাইরাসটি ছড়াতে শুরু করেছিল। সেই সময়ে এত অ্যান্টিবডি টেস্ট হত না।’’ গত বছর নভেম্বরে ‘সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) একই ধরনের একটি গবেষণা করেছিল। তাতে একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল সিডিসি।

তবে সেরোলজি টেস্টে কিছু অনিশ্চয়তা কাজ করে বলে এ বারে আরও বিশদে তদন্ত করা হয়েছে। প্রতিটি নমুনার দু’টি আলাদা পরীক্ষা করা হয়েছে। ‘ইমিউনোগ্লোবিন জি’ অ্যান্টিবডির সন্ধান করেছেন গবেষকেরা। এটি মানবকোষে ভাইরাসের অনুপ্রবেশ আটকে দেয়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এক জন সংক্রমিত হওয়ার অন্তত দু’সপ্তাহ পরে এই অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হয়। ফলে সংগৃহীত নমুনায় যাঁদের রক্তে অ্যান্টিবডি মিলেছে, তাঁরা অন্তত ২ সপ্তাহ আগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার বেশিও হতে পারে। তবে এই গবেষণায় কিছু খামতি রয়েছে। খুব অল্প সংখ্যক নমুনা নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। নমুনা কম হলে পরীক্ষার ফলাফলে অনেক সময় কিছু ভুল-ত্রুটি এসে যায়। এটাও স্পষ্ট নয়, যাঁদের নমুনায় অ্যান্টিবডি মিলেছে, তাঁরা অন্য কোনও দেশে গিয়েছিলেন, নাকি দেশেই সংক্রমিত হয়েছেন! এবং সর্বশেষ প্রশ্ন, যদি অন্য কোনও করোনাভাইরাসে (সার্স-কোভ-২ নয়) সংক্রমিত হয়ে ওই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে থাকে। এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে। তবে এই সম্ভাবনাগুলিকে যথেষ্ট হাল্কা ভাবেই দেখছেন গবেষকেরা। সব দিক মিলিয়ে তাঁদের বক্তব্য—ওই ন’টি নমুনার ফলস পজিটিভ অ্যান্টিবডি আসার সম্ভাবনা ১ লক্ষে ১ ভাগ! অতএব ৯৯,৯৯৯ ভাগই বলছে— করোনাভাইরাস আমেরিকায় ২০১৯-এর ডিসেম্বরেই ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy