এমনই কঠোর ভাবে লকডাউন কার্যকর করে করোনাভাইরাসমুক্ত হল নিউজিল্যান্ড। —ফাইল চিত্র
আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫০৪ জন। নতুন আক্রান্ত নেই। সুস্থ হয়ে উঠেছেন শেষ আক্রান্ত ব্যাক্তিও। তাই দেশকে করোনাভাইরাসমুক্ত ঘোষণা করে সমস্ত অর্থনৈতিক কাজকর্ম পুরোদমে চালু করছে নিউজিল্যান্ড। সোমবারই এই ঘোষণা করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন। আপাতত শুধু সীমান্ত বন্ধ রাখা ছাড়া সমস্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি সামাজিক দূরত্বের বিধিও মানার দরকার নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার।
বিশ্বে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা দেশগুলির মধ্যে অগ্রগণ্য ছিল নিউজিল্যান্ড। একমাত্র জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারোকেই বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই সংক্রমিত হয়েছেন মাত্র দেড় হাজারের মতো মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। কিন্তু সেখানেই কার্যত ইতি। ৭ সপ্তাহের লকডাউন শেষ হয়েছে গত ১৪ মে। তার পর থেকে আর কোনও নতুন আক্রান্তের সন্ধান নেই দেশে। আক্রান্তরাও সবাই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তাই নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রিসভা সোমবার মধ্যরাত থেকে সব কিছু খুলে দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পক্ষে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। তার পরই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশকে করোনামুক্ত ঘোষণা করে জেসিন্ডা আর্ডের্ন বলেছেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আমরা নজিরবিহীনভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, যত তাড়াতাড়ি এবং যত নিরাপদে সম্ভব এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া।’’ কিন্তু কঠোর ভাবে লকডাউন পালনের জেরে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থনীতি চাঙ্গা করার উপর। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের এখন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য ঝাঁপাতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯৯৮৩, মোট আক্রান্তে শুধু মহারাষ্ট্রই টপকে গেল চিনকে
সরকারের তরফে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রান্ত সতর্কবার্তায় দেশ এখন ১ নম্বরে। এর অর্থ আর কোনও কিছুতেই বাধা নেই। এখন শুধু সাধারণ মানুষ কার কার সঙ্গে মিশছেন, সেটা নিজেদের মোটামুটি মনে রাখতে হবে। পরে কেউ আক্রান্ত হলে যাতে তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে কোনও অসুবিধা না হয়। তবে শুধুমাত্র সীমান্তে এখনও কড়া নজরদারি রয়েছে এবং কারোকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না দেশে।
আরও পড়ুন: লকডাউন শিথিল পর্বের দ্বিতীয় দফা শুরু, বেশি ভয় নিয়েই আজ বেশি কাজে
তবে এখন কোনও ভাইরাসের অস্তিত্ব নেই মানে ভবিষ্যতে আর হবে না, এমনটা নিশ্চিত হতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। নিউজিল্যান্ডেরই পাবলিক হেল্থ ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর অধ্যাপক মাইকেল বেকার বলেছেন, ‘‘লেভেল-১ সতর্কবার্তায় নামিয়ে আনার অর্থ আমরা দেশ থেকে কোভিড-১৯ দূর করতে সফল হয়েছি। তবে এটা শুধু মাত্র প্রথম যুদ্ধে জয়। কিন্তু এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হবে। মহামারির ভয় ততদিনই থাকবে, যতদিন বিশ্বে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy