Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Coronavirus

করোনা-ঝড়ে আমরা সবাই এক নৌকায়, বললেন পোপ

আক্রান্তের নিরিখেও চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে ইটালি— ৮৬,৪৯৮।

নজিরবিহীন: সেন্ট পিটার’স স্কোয়ারে ব্যাসিলিকায় দাঁড়িয়ে একাই প্রার্থনায় মগ্ন পোপ ফ্রান্সিস। এএফপি

নজিরবিহীন: সেন্ট পিটার’স স্কোয়ারে ব্যাসিলিকায় দাঁড়িয়ে একাই প্রার্থনায় মগ্ন পোপ ফ্রান্সিস। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
বার্লিন শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০২:৪০
Share: Save:

এক দিনে ৯৬৯ জনের মৃত্যুতে শুক্রবার রেকর্ড গড়েছিল ইটালি। সেই রেকর্ড না ভাঙলেও আজ ফের ৮৮৯ জনের মৃত্যু হল। আর সেই সঙ্গেই মৃতের সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলল ১০,০২৩।

আক্রান্তের নিরিখেও চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে ইটালি— ৮৬,৪৯৮। চিনে সংখ্যাটা ৮১,৩৯৪। তবে সংক্রমণ-তালিকায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে আমেরিকা। সর্বশেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ লক্ষ ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত আমেরিকায়। মৃত্যু হয়েছে ১,৭১৭ জনের।

দু’দিন আগেই জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল গোটা বিশ্বে অন্তত ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত। কিন্তু দু’দিনেই সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও এক লক্ষ মানুষের নাম। যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে চিন্তায় বিশেষজ্ঞেরা। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের ১৮৩টি দেশে মোট সংক্রমিত ৬,৪২,২২০ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৯,৯০৮ জনের।

ভয়াবহ অবস্থা ইউরোপের। শুক্রবার ইটালিতে এক দিনে ৯৬৯ জন মারা গিয়েছেন। স্পেন সামান্যই পিছিয়ে। এক দিনে সে দেশে মারা গিয়েছেন ৮৩২ জন। মোট মৃত্যু ৫৬৯০। চিনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এই দুই দেশই। চিনে মোট ৩২৯৫ জন মারা গিয়েছেন।

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আজ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়। কিন্তু চেষ্টা করলে সংক্রমণের হার কিছুটা কমানো যায়।’’ ম্যার্কেলের চিকিৎসক করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। তার পর থেকে তিনি নিজেই বাড়িতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন।

করোনার সঙ্গে যুঝতে গিয়ে এক রকম ভেঙে পড়েছে ইটালির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। হাসপাতালের শয্যা ফাঁকা নেই, ভেন্টিলেটর নেই, এমনকি স্বাস্থ্য কর্মীদেরও আকাল পড়েছে। কারণ, একটা বড় সংখ্যক স্বাস্থ্য কর্মী নিজেরাই ভাইরাস আক্রান্ত। স্পেনেও প্রায় এক অবস্থা। কিছু দিন আগেই স্পেনের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। হাসপাতালের মেঝেতে এক হাত অন্তর শুয়ে রয়েছেন রোগীরা। ও দিকে খাঁ খাঁ করছে ইটালি, ফ্রান্স, স্পেনের রাস্তা। সম্প্রতি ড্রোন ওড়ানো হয়েছিল প্যারিসে। দেখা যায়, শহরের ব্যস্ততম রাস্তাগুলোয় জনমনিষ্যি নেই।

ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স স্কোয়ারে শুক্রবার একাই প্রার্থনা করেন পোপ ফ্রান্সিস। ইতিহাসে এ ঘটনা প্রথম। ভক্তদের ভিড় করার চেনা ছবি উধাও। কোথাও কেউ নেই। ব্যাসিলিকায় দাঁড়িয়ে পোপ একা, শহরবাসীদের জন্য প্রার্থনা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘চারদিকে ঘন অন্ধকার, শহর, রাস্তাঘাটে। অনেকের প্রাণ গিয়েছে। নিস্তব্ধতায় মোড়া চারপাশ। আর হতাশা। আমাদের ভয় করছে, মনে হচ্ছে কোন আঁধারে হারিয়ে যাচ্ছি...।’’ আরও বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস যদি ঝড় হয়, আমরা সবাই কিন্তু একই নৌকায় রয়েছি।’’ রেডিয়া, টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয় পোপের প্রার্থনা।

ইরান শনিবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের দেশে ১৩৯ জন মারা গিয়েছেন। এই নিয়ে ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৫১৭। নিজেদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবেও। তবে এখনই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে রাজি নন তিনি। জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সঙ্কটজনক কিন্তু স্থিতিশীল। আবের কথায়, ‘‘বাঁধ ভাঙেনি। কিন্তু আমরা স্রেফ কোনও মতে তা আটকে রেখেছি। বলা যায় খাদের ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Italy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE