Advertisement
০৪ মে ২০২৪
International news

স্পেনে গৃহবন্দি হয়ে আছি, আর এক ইটালি হয়ে উঠতে পারে যে কোনও মুহূর্তে

ছেলের স্কুল বন্ধ সোমবার থেকে। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ছেলেকে স্কুলে পাঠাইনি। কিন্তু স্বামীকে অফিস যেতে হচ্ছে। খুব চিন্তায় আছি।

লেখক সুমিতা গায়েন।

লেখক সুমিতা গায়েন।

সুমিতা গায়েন
মালাগা, স্পেন শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ১২:৪০
Share: Save:

আমি স্পেনের সেভিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্রী। স্বামী আর ছেলেকে নিয়ে থাকি মালাগায়। একমাস হল ইউনিভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। গৃহবন্দি গত শনিবার থেকে। গত কয়েক দিনে চারপাশের পরিবেশটা আমূল বদলে গিয়েছে। এখন মেডিক্যাল আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনো নিষেধ। তবে অফিস খোলা রয়েছে। ছেলের বয়স চার বছর। ছেলের স্কুল বন্ধ সোমবার থেকে। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ছেলেকে স্কুলে পাঠাইনি। কিন্তু স্বামীকে অফিস যেতে হচ্ছে। খুব চিন্তায় আছি।

আমার বাড়ি মেদিনীপুরে। বাড়ি ফিরে যাব ভেবেছিলাম। এখানে ইন্ডিয়ান এম্ব্যাসিতে যোগাযোগও করেছিলাম। ওঁরা বললেন, এয়ারপোর্ট বা বিমানে আক্রান্ত হওয়ার চান্স বেশি। ভয়ে আর বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। জানি না, বাড়ি ফিরতে পারব কি না বা কী অবস্থায় বাড়ি ফিরব। দুই বাড়িতে বয়স্ক বাবা, মা, কাকু রয়েছেন। তাঁদের জন্য সব সময় চিন্তা হচ্ছে। বাড়ির সকলেও আমাদের জন্য খুব চিন্তা করছেন। সবাই ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন। দিদি, জামাইবাবু বিদেশ মন্ত্রকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।

স্পেনের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। দিন দিন অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। গতকাল ২৯৪৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৩৯৫।এখনও পর্যন্ত ৮০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে গতকাল ১০৫ জন এবং পরশু ১৯১ জন মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে থামবে জানি না। ১৪ মার্চ আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ৬০০০-এর কাছাকাছি। এখানে কেউ বিষয়টাকে গুরুত্ব দেয়নি। গত শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত রেস্তোরাঁ খোলা ছিল এবং যথেষ্ট ভিড়ও ছিল। আরও আগে সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল। এখনই সমস্ত অফিস বন্ধ করে দিলে ভাল হয়। না হলে আমাদেরও ইটালির মতো অবস্থায় পড়তে হতে পারে। এক সপ্তাহ আগে ইটালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল স্পেনের মতোই।

আরও পড়ুন: মৃত্যুতে চিনকে ছাড়াল ইটালি, ১০ মিনিটে ১ জন মৃত ইরানে

প্রতিদিন সন্ধে ৮টার সময় আবাসনের সমস্ত বাসিন্দা ব্যালকনিতে বেরিয়ে এসে একসঙ্গে হাততালি দিচ্ছেন। সবাই গৃহবন্দি, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরচ্ছেন না। সবাই বোঝাতে চাইছেন, আমাদের মধ্যে দূরত্ব থাকলেও আমরা একসঙ্গেই লড়ছি করোনার বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE