Advertisement
E-Paper

ঢাকার স্কুলে ভেঙে পড়া বিমান চিনের তৈরি! মৃতের সংখ্যা ২২, চেনা যাচ্ছে না অনেককেই, দগ্ধ আরও দেড় শতাধিক

বাংলাদেশের বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, মাইলস্টোন স্কুলে ভেঙে পড়েছে তাদের এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি। সামরিক সরঞ্জাম-সংক্রান্ত মার্কিন ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল সিকিউরিটি ডট কম’-এর তথ্য অনুযায়ী, এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি চিনের একটি সংস্থা তৈরি করে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ২৩:৪০
ঢাকার স্কুলে উদ্ধারকাজে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এবং দমকল।

ঢাকার স্কুলে উদ্ধারকাজে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এবং দমকল। ছবি: সংগৃহীত।

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর সোমবার দুপুরে (স্থানীয় সময়) আচমকাই ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার একটি বিমান। ওড়ার ১২ মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। রাত গড়ালেও উদ্ধারকাজ চলছে ওই স্কুলে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আর কেউ আটকে আছেন কি না, তারই খোঁজ চলছে। সোমবার রাত পর্যন্ত দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২২। আহত দেড় শতাধিক। এমনই জানিয়েছে বাংলাদেশের ‘আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর’ (আইএসপিআর)।

বাংলাদেশের বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, মাইলস্টোন স্কুলে ভেঙে পড়েছে তাদের এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি। সামরিক সরঞ্জাম-সংক্রান্ত মার্কিন ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল সিকিউরিটি ডট কম’-এর তথ্য অনুযায়ী, এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি চিনের একটি সংস্থা তৈরি করে। সংস্থার নাম চেংদু এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন। এই বিমানটি দুই আসন বিশিষ্ট এবং একক ইঞ্জিন যুক্ত। সাধারণত প্রশিক্ষণের কাজে বিমানটি ব্যবহার করে সেনাবাহিনী। সোমবারও মহড়ার সময় ভেঙে পড়ে সেটি।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার দুপুরে ঢাকার কুর্মিটোলার বিমানঘাঁটি থেকে উড়েছিল এফটি-৭ বিজিআই বিমানটি। সেই বিমানে ছিলেন এক জন পাইলট। ওড়ার ১২ মিনিটের মাথাতেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমানটি ওড়ার পর পরই তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি লক্ষ করেন পাইলট। তিনি চেয়েছিলেন বিমানটিকে কোনও ফাঁকা এলাকায় অবতরণ করাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পারেননি। স্কুলের একটি ভবনের উপর ভেঙে পড়ে সেটি।

মাইলস্টোন স্কুলের যে ভবনে বিমানটি ভেঙে পড়ে সেখানে ১৬টি ক্লাসরুম আর শিক্ষকদের চারটি ঘর ছিল। প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হত এই ভবনে। বিমানটি যখন ভেঙে পড়ে, তখনও ক্লাস চলছিল। কিছু ক্ষণ পরেই ছুটির ঘণ্টা বাজত। তার আগেই দুর্ঘটনা। বিমান ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় তাতে। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে স্কুলের ওই ভবনে। অনেক পড়ুয়াই চাপা পড়ে ধ্বংস্তূপের নীচে। আগুনে দগ্ধ হয় অনেকে।

দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র স্কুলের সামনে ভিড় শুরু হয় অভিভাবকদের। সকলের চোখেমুখেই ছিল উৎকণ্ঠার ছাপ। সকলেই দিশাহারা। ধ্বংসস্তূপের নীচে সন্তানদের খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। অনেক অভিভাবকই দাবি করেন, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের খুঁজে পাচ্ছেন না। কেউ আবার ছোটেন হাসপাতালে। একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্স আসতে শুরু করে ঘটনাস্থলে। আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই অনেকের মৃত্যু হয়। তবে অনেকের দেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে, তাঁদের চেনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার সাহায্য নিচ্ছেন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছিল।

বিমান দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারের তরফে এক দিন জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়। শুধু তা-ই নয়, আহতদের বিনামূল্যে যাতে চিকিৎসা করা হয় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে সরকারের তরফে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আহতদের চিকিৎসা করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

Plane Crash Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy