দু’মাসের মধ্যেই আবার এইচ১বি ভিসা নীতিতে বদল করল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার! সেই সঙ্গে বদলানো হল আমেরিকায় স্থায়ী ভাবে বসবাসের ছাড়পত্র গ্রিনকার্ড দেওয়ার নীতিও! মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের (ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বা ডিএইচএস) সচিব ক্রিস্টি নোয়েম এ কথা জানিয়েছেন।
‘ফক্স নিউজ়’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুধবার নোয়েম জানিয়েছেন, অমেরিকায় কাজ করার ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য এইচ১বি ভিসা পেতে বা স্থায়ী ভাবে বসবাসের অধিকার পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, তাঁরা কোনও জঙ্গি সংগঠনের সমর্থক নন। দ্বিতীয়ত, আমেরিকা-বিদ্বেষী কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ নেই। তৃতীয়ত, ‘সঠিক কারণ বা উদ্দেশ্যে’ তাঁরা আমেরিকায় প্রবেশ করতে বা থাকতে চান।
আরও পড়ুন:
গত ১১ নভেম্বর ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার নেন মার্কিন গণমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’-এর সঞ্চালিকা লরা ইনগ্রাহাম। এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমাদের এখানে দক্ষ কর্মীর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমাদের অনেক কিছু শিখতে হবে। আপাতত প্রতিভাবানদের আমদানি করা ছাড়া দ্বিতীয় রাস্তা নেই। আপনি বেকারদের সংখ্যা বাড়িয়ে একটা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা খোলার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন না।’’ এইচ১বি ভিসার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন প্রদেশ জর্জিয়ার উদাহরণ দেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে ওখানে অভিযান চালানো হয়। ফলে বেআইনি ভাবে ঢুকে পড়া দক্ষিণ কোরিয়ার (পড়ুন রিপাবলিক অফ কোরিয়া বা আরওকে) বাসিন্দাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাঁরা ব্যাটারি তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এটা বানানো বেশ জটিল এবং বিপজ্জনক। যখন-তখন বিস্ফোরণ হতে পারে। প্রচুর সমস্যা রয়েছে। ফলে ওরা চলে যাওয়ায় দক্ষ কর্মীর অভাবে ভুগছে জর্জিয়া। এই কাজ আমাদের শিখতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
সাক্ষাৎকারে তাঁর ওই মন্তব্যের পর আমেরিকা জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। কারণ, গত সেপ্টেম্বরেই এইচ১বি ভিসানীতি কড়া করার বার্তা দিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল ট্রাম্প সরকার। তাতে বলা হয়েছিল, এ বার থেকে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ করতে গেলে মার্কিন সংস্থাগুলিকে বাড়তি অর্থ দিতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে বছরে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) করে নেবে ট্রাম্প সরকার। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে আমেরিকায় এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত ভারতীয় কর্মীরা। এর ফলে ভারতীয়রা অসুবিধায় পড়বেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্পষ্ট বলেন, ‘‘হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে যে শিল্পপতি আমেরিকায় কারখানা খুলছেন, তাঁকে আপনি অদক্ষ-বেকার মার্কিনদের চাকরি দিতে বলতে পারবেন না। তাঁরা সে ভাবে কাজ করতে আগ্রহী হবেন না।’’