আমেরিকার স্কুল, কলেজে পড়ুয়াদের বৃত্তি, ক্যাম্পাসে কোনও সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা ভর্তির ক্ষেত্রে জাতি, বর্ণ ‘বিভাজন’ চলবে না। অর্থাৎ কোনও বিশেষ জাতি বা বর্ণের মানুষকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া চলবে না। না মানলে অনুদান বন্ধ করে দেবে আমেরিকার শিক্ষা দফতর। হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ১৪ দিনের মধ্যে এই বিশেষ সুবিধা দেওয়া বন্ধ না হলে অনুদান বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে মার্কিন শিক্ষা দফতর। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার স্কুলগুলিকে এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর। একটি বিবৃতিতে শিক্ষা দফতরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী সচিব (নাগরিক অধিকার) ক্রেগ টেনর জানিয়েছেন, আমেরিকার স্কুল-কলেজে এত দিন কিছু বিশেষ প্রকল্প এবং বৃত্তির ব্যবস্থা ছিল, যা মূলত কৃষ্ণাঙ্গ এবং লাতিন আমেরিকার পড়ুয়াদের সুবিধা দেওয়ার জন্য। এই বৃত্তি এবং প্রকল্প ওই পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করত। টেনরের দাবি, এর ফলে শ্বেতাঙ্গ এবং এশীয় পড়ুয়া, যাঁরা দুঃস্থ পরিবার থেকে এসেছেন, তাঁরা বঞ্চিত হতেন। তাঁর কথায়, ‘‘জাতের কারণে কোনও পড়ুয়ার জন্য কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ব্যবস্থা করলে তা আইনবিরোধী।’’ এই প্রসঙ্গে ২০২৩ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশিকা কথাও মনে করিয়েছেন টেনর। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও জাতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলে তা আইনবিরুদ্ধ। আমেরিকার সংবিধানের বিরোধী।
আরও পড়ুন:
এর পরেই নির্দেশিকা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকার শিক্ষা দফতর। কিন্ডারগার্টেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলগুলিকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও জাতিকে বিশেষ সুবিধা দিলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। নির্দেশিকায় এ-ও বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য দূর করতেই এই উদ্যোগ। বেশ কিছু বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য যে অনুদান দিত আমেরিকার শিক্ষা দফতর, তা-ও বন্ধ করা হয়েছে। শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে ৬০০ মিলিয়ন (৬০ কোটি) ডলার অনুদান বন্ধ করেছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সামাজিক ন্যায়, জাতিবিদ্বেষ প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আর অনুদান দেবে না বলে জানিয়েছে ট্রাম্পের দফতর।