‘বিদেশি শত্রু’দের হাত থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসকে তিনি রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেনা নামানো নিয়ে এই যুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও কেন লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা নামানো হয়েছে, তার যুক্তি দিয়েছেন ট্রাম্প। সেনাবাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি পৌঁছেছিলেন উত্তর ক্যারোলাইনার সেনাছাউনিতে। সেখানে সেনার উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘এই দিন দেখার জন্য বিদেশের মাটিতে গিয়ে আমাদের সেনারা রক্ত ঝরাননি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ক্যালিফর্নিয়ায় যা হচ্ছে তা শান্তি, আইনশৃঙ্খলা এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ। বিদেশি পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীরা অশান্তির আবহ তৈরি করছেন।’’ তাঁর প্রশাসন এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসকে মুক্ত করবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুড়ছে বিক্ষোভের আগুনে। টানা পাঁচ দিন ধরে আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের রাস্তায় প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরে নামানো হয়েছে সেনা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ লস অ্যাঞ্জেলেস। চলছে লুটপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে স্পর্শকাতর এলাকায়।
বিক্ষোভ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত প্রথম থেকেই প্রশ্নের মুখে। ক্যালিফর্নিয়ার নেতারা সুর চড়াচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। তবে তিনি অনড় নিজের সিদ্ধান্তেই। ধাপে ধাপে লস অ্যাঞ্জেলেসে ইতিমধ্যেই ৪০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মোকাবিলায় আমেরিকা প্রশাসনের একের পর এক পদক্ষেপ সমালোচনার মুখে। পরিস্থিতি সামলাতে প্রথমে ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পরে আরও ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেরিনবাহিনীর প্রায় ৭০০ সদস্যকে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হয়েছে। হিংসার আশ্রয় নিলে ফল ভাল হবে না বলে বিক্ষোভকারীদের আগেই কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ক্যালিফর্নিয়ার প্রশাসন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছেন ক্যালিফর্নিয়া প্রদেশের ডেমোক্র্যাট গভর্নর নিউসাম। তাঁর অভিযোগ, কোনও রকম আলোচনা ছাড়়াই লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যালিফর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা জানিয়েছেন, নিউসামের সঙ্গে আলোচনা না করেই বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের ফলে ট্রাম্প সীমা অতিক্রম করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। যদিও তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাঁর দাবি, সরকারি সম্পত্তি এবং কর্মীদের সুরক্ষার জন্য সেনা মোতায়েন করা অত্যন্ত জরুরি। সেনারা শুধু ক্যালিফর্নিয়ার বাসিন্দাদের রক্ষা করছে তা নয়, একই সঙ্গে গণতন্ত্রকেও রক্ষা করছে।