E-Paper

ইরানকে হুমকি ট্রাম্পের, কথা পুতিনের সঙ্গে

গোড়া থেকেই আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিজের স্বভাবোচিত ভঙ্গিতে নানা ধরনের বক্তব্য রাখছেন। শুক্রবার ইজ়রায়েলের হামলার পরপরই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘অসাধারণ কাজ। ইরানকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছিল...।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ০৮:১৮
(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দীর্ঘ ফোনালাপ। ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষ ঘিরে পশ্চিম এশিয়ায় বাড়তে থাকা উত্তেজনা নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ফোন চলেছে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে। বন্ধু ইরানের জন্য উদ্বিগ্ন রাশিয়া। শোনা যাচ্ছে, ইজ়রায়েল-কাঁটা নিয়েই মূলত কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। পরে নিজের সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘রাতে ইরানে যে হামলা চলেছে, তা নিয়ে আমেরিকার কিছু করার নেই। কিন্তু আমাদের উপর যদি কোনও প্রকারের হামলা হয়, তা হলে ওরা কল্পনাও করতে পারছে না, আমেরিকান সশস্ত্র বাহিনী কী করবে!’’

গোড়া থেকেই আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিজের স্বভাবোচিত ভঙ্গিতে নানা ধরনের বক্তব্য রাখছেন। শুক্রবার ইজ়রায়েলের হামলার পরপরই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘অসাধারণ কাজ। ইরানকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছিল...।’’ আজ অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘উনিও (পুতিন) মনে করেন, আমিও মনে করি, ইজ়রায়েল-ইরান সংঘর্ষ অবিলম্বে থামা উচিত।’’ সেই সঙ্গেই মনে করিয়ে দিলেন, যে ভাবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তিনি থামিয়েছেন, সে ভাবেই এই যুদ্ধও থামাবেন। আবার এর কিছু পরেই তাঁর ইরানকে হুমকি, আমেরিকান সেনাবাহিনী হামলাজন্য প্রস্তুত।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ক্রেমলিনের মিত্র হয়ে থেকেছে ইরান। যুদ্ধ শুরু হওয়া ইস্তক রাশিয়াকে ড্রোন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে গিয়েছে ইরান। এ বারে বন্ধুর জন্য রাশিয়ার সাহায্যের পালা। রাশিয়ার প্রস্তাব, ইরান-ইজ়রায়েলের উচিত দু’পক্ষের ভালমন্দ দেখে সমঝোতায় পৌঁছনো ও মিটমাট করে নেওয়া। শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্প সমর্থন জানিয়েছেন পুতিনকে। কিন্তু একই সঙ্গে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ারও উচিত ইউক্রেনের সঙ্গে মিটমাট করে নেওয়া।

ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে সরব তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এর্ডোয়ানও। তাঁর বক্তব্য, এই ‘বিধ্বংসী যুদ্ধ’ ফের শরণার্থী সঙ্কট তৈরি করবে পশ্চিম এশিয়ায়। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে এর্ডোয়ানের। বলেছেন, ‘‘গোটা অঞ্চলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে ইজ়রায়েল।’’ পশ্চিম এশিয়ার প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছেন এর্ডোয়ান। সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। শরণার্থী সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় তুরস্ক। গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে লক্ষ লক্ষ সিরীয় আশ্রয় নিয়েছে তুরস্কে। ফের সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি চান না তিনি। মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফতে আল-সিসি এবং জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লার সঙ্গেও কথা হয়েছে এর্ডোয়ানের। তাঁর বক্তব্য, ইরানের পরমাণু শক্তি নিয়ে যে বিবাদ রয়েছে, তা একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই মেটানো সম্ভব। এ ভাবে নয়। উল্টো দিকে ইজ়রায়েলকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য: ‘‘প্যালেস্টাইনে দখলদারি ও গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো চোখ বন্ধ করে রয়েছে। সেটাই বাড়তে বাড়তে এখন এই অবস্থা।’’

আমেরিকার ভিতরেও ইজ়রায়েলের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, তিনি একটি নতুন প্রস্তাবনা আনছেন। তাতে স্পষ্ট করে জানানো হবে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কোনও সামরিক সাহায্য করবে না আমেরিকা। স্যান্ডার্সের কথায়, ‘‘বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বেআইনি কর্মকাণ্ডে কখনওই নাক গলানো উচিত নয় আমেরিকার।’’ তবে শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্পও সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে চাইছেন না। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে হত্যার ইজ়রায়েলি-পরিকল্পনা বাতিল করেছেন খোদ ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ইরান কি কোনও আমেরিকান নেতাকে মেরেছে? ওরা কিছু না করলে আমরাও এ নিয়ে কথা বলব না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Donald Trump Vladimir Putin

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy