Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মার্কিন ছাত্রের মৃত্যুতে কিমকেই দুষলেন ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ার জেলে প্রায় বছর দেড়েক বন্দি থাকার পরে গত সপ্তাহেই দেশে ফিরেছিলেন ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওটো ওয়ার্মবিয়ার। তবে সুস্থ অবস্থায় নয়, কোমায় চলে গিয়েছিলেন।

ওটো ওয়ার্মবিয়ার

ওটো ওয়ার্মবিয়ার

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০২:৪৭
Share: Save:

ফের একহাত কিম জং উনকে। উত্তর কোরিয়ার বেপরোয়া পরমাণু কর্মসূচি রুখতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আগেই। এ বার এক মার্কিন ছাত্রকে তিলে তিলে মেরে ফেলার অভিযোগেও পিয়ংইয়ংকে কাঠগড়ায় তুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

উত্তর কোরিয়ার জেলে প্রায় বছর দেড়েক বন্দি থাকার পরে গত সপ্তাহেই দেশে ফিরেছিলেন ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওটো ওয়ার্মবিয়ার। তবে সুস্থ অবস্থায় নয়, কোমায় চলে গিয়েছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিনসিনাটি ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল সেন্টারে গত কালই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। হোয়াইট হাউস সূত্রের খবর, সেই খবর কানে যেতেই বাঁধ ভাঙে প্রেসিডেন্টের। এক লিখিত বিবৃতিতে কিম প্রশাসনকে ‘ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর’ তকমা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এমন একটা দেশকে কী ভাবে শায়েস্তা করতে হয়, তা আমাদের ভালই জানা আছে।’’

বেজায় খাপ্পা মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনও। উত্তর কোরিয়াকে এখনই বয়কট করে সে দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করতে চাইছে তাঁর দফতর। পিয়ংইয়ংয়ে এখনও অবৈধ ভাবে আটক তিন মার্কিন নাগরিকের অবিলম্বে মুক্তি চেয়েছেন টিলারসন। ওটোর বাবা তো সাফ বলেই দিলেন, ‘‘ওরা জেলেই ছেলেটাকে প্রায় মেরে ফেলেছিল। এক বছর ধরে কোমায় ফেলে রেখেছিল, অথচ আমাদের কিচ্ছুটি জানানো হয়নি। মাথার কোষ সব নষ্ট করে ফেলেছিল আগেই। তাই চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলাম না ছেলেটাকে। এটা অন্যায় নয়!’’

আরও পড়ুন: নিশানায় পাকিস্তান, ইঙ্গিত ট্রাম্পের

ঠিক কী হয়েছিল ওটোর? গত বছর জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন বছর বাইশের এই তরুণ। শোনা যায়, সেখানকার হোটেল থেকে একটি সরকারি প্রচারমূলক পোস্টার চুরির দায়ে ২০১৬-র মার্চে তাঁকে ১৫ বছরের জন্য সশ্রম কারাদণ্ড দেয় পিয়ংইয়ং। কিমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রেরও অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। তার পর থেকে ছেলের আর কোনও খবরই পাননি ওয়ার্মবিয়ার পরিবার। তার পর এই গত সপ্তাহে জানা যায়, জেলে যাওয়ার পর-পরই কোমায় চলে গিয়েছিলেন ওটো। আর তাই ‘মানবিক’ কারণেই তাঁকে ছাড়তে রাজি হয় কিম প্রশাসন।

ওটোর পরিবারের দাবি, জেলে অমানবিক নির্যাতনের কারণেই কোমায় চলে যান তাঁদের ছেলে। আর উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং ঘুমের ওষুধ খেয়েই ওটোর ওই হাল হয়েছিল। রোগের নাম বটুলিজম। মার্কিন চিকিৎসকেরা যদিও পরীক্ষা করে তাঁর খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা ওই রোগের কোনও প্রমাণ পাননি। উত্তর কোরিয়ার জেলে ওটোর ঠিক কী চিকিৎসা হয়েছিল, তা নিয়েও ধোঁয়াশা বিস্তর। ঘটনাটি নিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হলে, মুখে কুলুপ আঁটেন রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত।

ঘুরেফিরে তাই ঘরের ছেলের মৃত্যুর জন্য কিম প্রশাসনকেই দুষছে আমেরিকা। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে প্রেসি়ডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘‘আইনের শাসন কিংবা মানবাধিকারের প্রতি ওদের যে ন্যূনতম শ্রদ্ধাও নেই, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল। উত্তর কোরিয়ার এই রেওয়াজ বন্ধ করতেই হবে।’’ চড়া প্রতিক্রিয়া মিলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির তরফেও।
তিনি জানান, উত্তর কোরিয়া এর আগেও বহু নিরাপরাধকে মেরেছে, কিন্তু ওটো ওয়ার্মবিয়ারের মৃত্যু আমেরিকাকে একেবারে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE