আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কনীতিতে কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হলেন। দেশের অভ্যন্তরে ২০০টিরও বেশি খাদ্যপণ্যে শুক্রবার (স্থানীয় সময়) শুল্ক কমানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূলবৃদ্ধির কারণে সম্প্রতি মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলা করতেই এই সিদ্ধান্ত নিল তাঁর প্রশাসন। এর ফলে আমেরিকার বাজারে দাম কমতে চলেছে গোমাংস, কলা, কফি, কমলালেবুর রসের মতো একাধিক পণ্যের।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, খাদ্যপণ্যে ট্রাম্প যে শুল্কছাড় দিয়েছেন, তা স্থানীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে। বাড়তি শুল্কের কারণে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন। ট্রাম্প প্রথম থেকে সেই দাবি নস্যাৎ করে এসেছেন এবং শুল্কের পক্ষে কথা বলেছেন। শুক্রবার শুল্কহ্রাসের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই কারণে মুদ্রাস্ফীতি হতেও পারে।’’ তবে এই মুহূর্তে আমেরিকায় কোনও মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে বলে তিনি মানতে চাননি।
আরও পড়ুন:
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন নতুন যে বাণিজ্যচুক্তির কাঠামো ঘোষণা করেছে, তা চূড়ান্ত হলে আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা, এল সালভাদর থেকে আমদানিকৃত খাদ্য এবং অন্যান্য পণ্যেও শুল্ক কিছুটা কমবে। বছরশেষের আগে আরও কয়েকটি চুক্তি মার্কিন কর্তাদের নজরে রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুল্কনীতি নিয়ে চালিয়ে খেলেছেন ট্রাম্প। একাধিক দেশের পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। ভারতের উপর চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ হারে চড়া শুল্ক। তার ফলে অনেক দেশের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে মার্কিন বাজারেও। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হুহু করে বেড়েছে। এমনকি, অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গেও ট্রাম্পের নীতির কারণে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার বাজারে খাদ্যপণ্যের অভ্যন্তরীণ শুল্ক কিছুটা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
শুল্কনীতির পক্ষেই এখনও জোর দিয়ে কথা বলছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, এই শুল্ক থেকে আদায়ীকৃত রাজস্ব হোয়াইট হাউসকে অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করে তুলছে। শুল্কের টাকা থেকে আমেরিকায় আর্থিক ভাবে অসচ্ছলদের সাহায্য করবেন, কিছু দিন আগে ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। নিম্ন এবং মধ্য আয়ের মার্কিন নাগরিকদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে দু’হাজার ডলার করে। যদিও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গেলে মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থন প্রয়োজন। তা ছাড়া, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, শুল্কের আয় আপাতত সরকারের ঋণ পরিশোধের কাজে লাগছে। অন্য কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।