Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সিঁড়ি ভাঙতে স্বপ্ন ‘মেক ইন আমেরিকা’-ই

দুই নেতা, এক সুর। প্রথম জন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। বছর দু’য়েক আগে থেকেই যিনি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র স্বপ্ন দেখছেন। দেখাচ্ছেনও। আর দ্বিতীয় জন হোয়াইট হাউসের দৌড় শুরু করেছিলেন ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ স্লোগান দিয়ে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০২
Share: Save:

দুই নেতা, এক সুর।

প্রথম জন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। বছর দু’য়েক আগে থেকেই যিনি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র স্বপ্ন দেখছেন। দেখাচ্ছেনও।

আর দ্বিতীয় জন হোয়াইট হাউসের দৌড় শুরু করেছিলেন ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ স্লোগান দিয়ে। সেখান থেকে এক ধাপ এগিয়ে এখন তাঁর কথাতেও— ‘মেক ইন আমেরিকা’-র সুর। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের সিঁড়ি ভাঙতে যাওয়ার মাস দু’য়েক বাকি থাকতেই জানলেন, আর অন্যের মুখ চেয়ে থাকা নয়। ইস্পাত থেকে গাড়ি তৈরি, বিদ্যুৎশিল্প থেকে চিকিৎসা খাতে নানাবিধ উদ্ভাবন— ট্রাম্প চাইছেন, সবটাই এ বার দেশে তৈরি হোক।

মোদী আপাতত নোটে নাজেহাল দেশ নিয়ে ব্যস্ত! আর দিল্লি থেকে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার দূরে ওয়াশিংটনে বসে ট্রাম্পের মাথায় ঘুরছে তাঁর প্রথম ১০০ দিনের কাজ। ট্রাম্প সরকারি ভাবে হোয়াইট হাউসে আসছেন ২০ জানুয়ারি। আর সে দিনই আমেরিকা ‘ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ’ (টিপিপি) বাণিজ্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসবে বলে এক ভিডিও-বার্তায় জানিয়েছেন তিনি।

আমেরিকা ছাড়া ২০১৫-র এই বাণিজ্য চুক্তিতে সই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চিলি, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড-সহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মোট ১২টি দেশের। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ শুল্ক সুবিধের কথা উল্লেখ থাকলেও, চুক্তিটি ঘিরে প্রথম থেকেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। বিরোধীদের মতে, বহুজাতিক কর্পোরেটরাই সুবিধা করে দিতেই এই চুক্তি। তাতেই সুর মিলিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘আমার কাছে আমেরিকার স্বার্থই আগে। ভয়াবহ এই চুক্তি বাতিল করে তাই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা এমন ভাবে এগোব, যাতে ফের শিল্প আর কর্মসংস্থানের জোয়ার আসে আমেরিকায়।’’

আর তাঁর ঘোষণা মোতাবেক আমেরিকা যদি সত্যিই টিপিপি থেকে সরে আসে, তা হলে চুক্তিটাই অর্থহীন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। চুক্তিতে যে ১২টি দেশের সই রয়েছ, বর্তমানে তারাই বিশ্ব বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ট্রাম্পের চুক্তি বাতিলের হুমকিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেক রাষ্ট্রনেতাই। তবে এর জেরে শূন্যতা তৈরি হলে, পরোক্ষে তা চিনকেই বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে বলে মনে করছে একাংশ। যদিও ট্রাম্প এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

প্রচারের শুরু থেকেই যার বিরোধিতা করে এসেছেন, ক্ষমতায় আসার পর চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত সেই ‘ওবামা কেয়ার’ নিয়েই বা তাঁর পদক্ষেপ কী হবে, খোলসা করেননি ট্রাম্প। কিছু বলেননি অভিবাসন রুখতে মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তোলা নিয়েও। তবে ভিসা সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্ত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যে হুঁশিয়ারির লক্ষ্য অবশ্যই মেক্সিকোর মতো পড়শি দেশ, যেখান থেকে সব থেকে বেশি অবৈধ অভিবাসী ঢোকে আমেরিকায়! পাশাপাশি, দেশে জ্বালানি উৎপাদন করা নিয়ে যা বাধা রয়েছে, তা বাতিল করার পক্ষে জোর সওয়াল করেছেন প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট। তিনি জানান, সাইবার হামলা প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

কিন্তু কাদের নিয়ে প্রশাসন চালাবেন ট্রাম্প— মার্কিন মুলুকে এ নিয়েও এখন জোর জল্পনা। সিআইএ প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট তাঁর পছন্দের কথা জানালেও, ধোঁয়াশা কাটছে না। আর ট্রাম্প নিজে বলছেন, ‘‘যাঁরা সত্যিকারে ‘গ্রেট’, মেধাবী আর দেশপ্রেমিক, তাঁরাই মূলত আমার সরকারের অংশ হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Make in America
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE