রাষ্ট্রপুঞ্জের শৌচাগারে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠল। আমেরিকার স্বাস্থ্য দফতরের ওই আধিকারিককে হেনস্থা করার অভিযোগে এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হোয়াইট হাউস।
শুধু তা-ই নয়, হোয়াইট হাউসের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন এক জন ‘উন্মাদ বামপন্থী’। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’-কে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সচিব অ্যানা কেলি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিককে শৌচাগারে মারধর করা হয়েছে। এটা ঘটিয়েছে এক জন উন্মাদ বামপন্থী। ওই ব্যক্তি কোনও ভাবে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় ভেঙে (রাষ্ট্রপুঞ্জের) ভিতর ঢুকে পড়েছিলেন।” তবে ধৃত সন্দেহভাজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই আধিকারিক রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের সচিব তথা ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। প্রসঙ্গত, কেনেডি এই দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন স্বাস্থ্য দফতরের ভ্যাকসিন-বিরোধী নীতি, ক্যানসারের গবেষণায় বরাদ্দ কাটছাঁট করার পরিকল্পনা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সব বিতর্কের রেশ রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘটনায় পড়েছে কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জে তাঁর বিরুদ্ধে তিন অন্তর্ঘাত হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তব্য পেশ করতে আন্তর্জাতিক ওই সংগঠনের নিউ ইয়র্কের সদর দফতরে গিয়েছিলেন। বুধবার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “গত কাল (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রপুঞ্জে একের পর এক মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটেছে। একটি-দু’টি নয়, তিনটি অশুভ ঘটনা ঘটেছে।” সমাজমাধ্যমের ওই পোস্টেই তিনটি ‘অশুভ ঘটনা’র কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রথমেই চলমান সিঁড়িতে বিভ্রাটের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। তিনি জানান, অল্পের জন্য তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প রক্ষা পেয়েছেন। না-হলে ধাতব সিঁড়িতে হোঁচট খেয়ে পড়তেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, যে চলমান সিঁড়ি দিয়ে ট্রাম্প এবং মেলানিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার মূল কক্ষে যাচ্ছিলেন, সেটি হঠাৎই আটকে যায়। হাতল ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন দু’জনে। ট্রাম্প ঘটনাটিকে ‘পুরোপুরি অন্তর্ঘাত’ বলে দাবি করেন।
চলমান সিঁড়ির পর টেলিপ্রম্পটার নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় ট্রাম্পকে। সাধারণ সভায় বক্তৃতা করার শুরুতেই তাঁর টেলিপ্রম্পটারটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর পরেই নাকি ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে ট্রাম্পের। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘‘যিনি এই টেলিপ্রম্পটারটি নিয়ন্ত্রণ করছেন, তিনি বড় বিপদে পড়বেন।’’ সব শেষে ট্রাম্প কাঠগড়ায় দাঁড় করান, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ‘সাউন্ড সিস্টেম’কে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, তাঁর বক্তৃতা শুনতে বেগ পেতে হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের। ট্রাম্প বর্ণিত এই তিন অন্তর্ঘাতের সঙ্গে আধিকারিক নিগ্রহের বিষয়টিও যুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।